নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: এক যুবকের রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধারকে ঘিরে শনিবার ব্যান্ডেলের কানাগড় টাওয়ার বাগানে চাঞ্চল্য ছড়ায়। বাড়ির কাছেই একটি ঝোপে ওই যুবকের দেহ স্থানীয়রা দেখতে পান। পরে পুলিস এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে। পুলিস জানিয়েছে, ওই যুবকের নাম রমেশ মুদালিয়া (৪০)। প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, রমেশের বুক থেকে পেট পর্যন্ত ধারালো অস্ত্র দিয়ে চিরে দেওয়া হয়েছিল। সেইসঙ্গে তাঁর গলাতেও ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। পেশায় দিনমজুর ওই যুবকের পরিবারের দাবি, স্ত্রীর বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্ক নিয়ে আপত্তি করায় যুবককে খুন হতে হয়েছে।
মৃতের সৎ মা নাগরানি মুদালিয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস রমেশের স্ত্রী ভারতী এবং শাশুড়ি ইন্দ্রাস্বামীকে আটক করেছে। পরে পুলিস ভারতীর পরিচিত এক যুবককেও আটক করে। যদিও তিনজনই নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করেছে। তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, ঘটনা যাই হোক, ওই খুনের পিছনে পেশাদার অপরাধীর হাত আছে। রমেশের দেহের আঘাত থেকেই তা স্পষ্ট। চন্দননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা কর্তারা এদিন ঘটনাস্থলে সরেজমিনে তদন্ত করেন। পুলিস জানিয়েছে, একটি খুনের অভিযোগ হয়েছে। একাধিক সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বেশ কিছু সূত্র মিলেছে।
মৃতের সৎ মা নাগরানি মুদালিয়া বলেন, ব্যান্ডেলের এক যুবকের সঙ্গে ভারতীর অবৈধ সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। তা নিয়ে রমেশের সঙ্গে ভারতীর বিবাদ চলছিল। ভারতীর প্রেমিক সমাজবিরোধী। ওরা দু’জনে মিলে পথের কাঁটা সরাতে রমেশকে খুন করেছে। মৃতের পরিবারের দাবি, ভারতী যখন তখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেত। কোনও কোনও সময় বাড়িতে ফিরত না। এসব নিয়ে সম্প্রতি স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ চরমে ওঠে। মৃতের প্রতিবেশীদের দাবি, বৃহস্পতিবার দিনভর রমেশকে পাড়ায় দেখা যায়নি। স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা না হলেও রমেশ খুবই ভদ্র ছিলেন।
পুলিস ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় দশ বছর আগে ভারতীর সঙ্গে রমেশের বিয়ে হয়। তাঁদের আট বছরের এক ছেলে রয়েছে। সম্প্রতি স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে রমেশ ব্যান্ডেলের টাওয়ার বাগান এলাকায় ভাড়া বাড়িতে এসে উঠেছিলেন। গোড়ার দিকে দু’জনের সম্পর্ক ভালোই ছিল। বছরখানেক আছে ব্যান্ডেলের এক যুবকের সঙ্গে ভারতীর পরিচয় হয়। তারপর থেকেই দু’জনের সম্পর্কে তিক্ততা নেমে আসে। এদিন রমেশের মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ায় পরিস্থিতি অন্যমাত্রা নিয়েছে।