• বাঘের অবস্থান জানতে কালঘাম ছুটছে বনদপ্তরের
    বর্তমান | ২১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বারুইপুর: বাঘের আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না। কয়েক দিন ধরে মৈপীঠের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারা বাঘের ভয়ে রাত জাগছেন। বনদপ্তরের কর্মীরাও হন্যে হয়ে ঘুরছেন বাঘের হদিশ পেতে। তবে এখনও নিশ্চিত নয়, বাঘ লোকালয়ে রয়েছে না জঙ্গলে ফিরে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ৯টা নাগাদ রাস্তায় দাঁড়িয়ে মোবাইলে কথা বলছিল নবম শ্রেণির ছাত্র রাহুল হালদার। সেই সময় তার পিঠে বাঘ আঁচড় দেয়। ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক চেপে বসে। শুক্রবার সকালে মৈপীঠের গুড়গুড়িয়া-ভুবনেশ্বরী পঞ্চায়েতের দেবীপুর নকুলের মোড় এলাকায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যায়। বনদপ্তরের কর্মীরাও দ্রুত এলাকায় আসে। তারপরই বাঘের সঠিক অবস্থান জানতে জোরদার তল্লাশি শুরু করে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বনদপ্তরের টিম। তারা জানতে পারে, গৌড়েরচক শ্মশান সংলগ্ন এলাকা, শনিবারের বাজার এলাকা, খাটুয়া পাড়া এলাকাতেও জঙ্গলের কাছে বাঘের পায়ের ছাপ মিলেছে। যা বনদপ্তরের কর্মীদের ভাবিয়ে তুলেছে। এরপর জঙ্গলে নেমে বাঘের পায়ের ছাপ ধরে ধরে চলে পর্যবেক্ষণ। জেলা বন বিভাগের আধিকারিক নিশা গোস্বামী, অতিরিক্ত বন আধিকারিক অনুরাগ চৌধুরী ঘটনাস্থলে যান। নদীতেও বোট সহযোগে চলে তল্লাশি। যদিও বাঘ চলে গিয়েছে কি না, তার উত্তর নেই বনদপ্তরের কর্তাদের কাছে।


    বনদপ্তরের কর্তাদের ধারণা, মুহূর্তের মধ্যে অবস্থান বদলে ফেলছে দক্ষিণরায়। এদিকে, বাঘের আতঙ্কে গোটা গ্রাম তটস্থ। সন্ধ্যা নামতেই ঘরবন্দি হয়ে যাচ্ছেন বাসিন্দারা। গৃহপালিত পশুদের ঘরের কোনে রেখে দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকেও এলাকায় মাইকিং চলছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা বন বিভাগীয় আধিকারিক নিশা গোস্বামী বলেন, বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যেতেই সবরকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জঙ্গল সংলগ্ন রাস্তায় নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। রাতে আলো জ্বালিয়ে রাখা হবে। বাজি পটকাও মজুত রাখা হচ্ছে।    


    অন্যদিকে, দেবীপুর নকুলের মোড় ও গৌড়েরচক শ্মশান সংলগ্ন এলাকায় নাইলনের জাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে ঘেরার জন্য। বনদপ্তরের প্রায় শতাধিক কর্মী পাহারাতে রয়েছেন। সেই সঙ্গে গ্রামের লোকজনও পালা করে রাত পাহারার ব্যবস্থা করছেন। গ্রামের বাসিন্দা শুকদেব হালদার বলেন, ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় পায়ের ছাপ মিলেছে। কয়েকদিন ধরেই আমরা খুব আতঙ্কে রয়েছি। বাঘ জঙ্গলে ফিরে গিয়েছে কি না, তাও বনদপ্তর থেকে জানানো হচ্ছে না। 
  • Link to this news (বর্তমান)