• ৬ বছর পার! রূপশ্রী-র নিয়ম জানতে চাইছেন কাউন্সিলাররা
    এই সময় | ২১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • দেবাশিস দাস

    বিয়ে নিয়ে সরগরম হয়ে উঠল কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশন। ধর্মীয় রীতি অনুসারে বিয়ে না আইনি উপায়ে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করলে রূপশ্রী প্রকল্পের টাকা মিলবে— তা নিয়ে আজও যে ধোঁয়াশা কাটেনি কাউন্সিলার এবং মেয়র পারিষদদের, বোঝা গেল শুক্রবার। অথচ সেই ২০১৮–য় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রূপশ্রী প্রকল্প চালু করেছিলেন।

    সামাজিক এই প্রকল্পে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারের মেয়েরা বিয়ে করলে ২৫ হাজার টাকা সরকারি অনুদান পান। কিন্তু ছ’বছরেও কলকাতা পুরসভার অনেক কাউন্সিলারই জেনে উঠতে পারেননি, ঠিক কী উপায়ে আবেদন করলে এই অনুদান পাওয়া যায়! কাউন্সিলাররা মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কাছে রূপশ্রী–র নিয়মাবলির প্রতিলিপি দেওয়ারও দাবি জানান।

    পুর–অধিবেশনে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার ইলোরা সাহা প্রশ্ন করেন, ‘কলকাতায় অনেক অনগ্রসর মানুষ আছেন যাঁরা এখনও রেজিস্ট্রি ম্যারেজে রাজি হন না। রূপশ্রীর টাকা পেতে হলে কি রেজিস্ট্রি ম্যারেজ বাধ্যতামূলক? বিয়ের ঠিক কত দিন আগে রূপশ্রী–র জন্যে আবেদন জানাতে হয়?’

    উত্তর দিতে গিয়ে সামাজিক প্রকল্প বিভাগের মেয়র পারিষদ মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আবেদনকারীর বিয়ের কার্ড–সহ বিয়ের তারিখের ৩০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে সাদা কাগজে আবেদন জানাতে হবে।’ কিন্তু রেজিস্ট্রি ম্যারেজ বাধ্যতামূলক কিনা, তা নিয়ে স্পষ্ট উত্তর দিতে পারেননি মেয়র পারিষদ। ফের ইলোরা তাঁকে প্রশ্ন করেন। ইলোরা জানান, শহরে বসবাসকারী বহু মানুষ ধর্মীয় নিয়ম মেনে বিয়েতে আগ্রহী। তাঁরা রেজিস্ট্রি ম্যারেজে অভ্যস্ত নন।

    এক–একে মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার, দেবাশিস কুমার, অসীম বসুকেও আলোচনায় অংশ নিতে দেখা যায়। দেবব্রত বলেন, ‘রেজিস্ট্রি ম্যারেজে নির্দিষ্ট সময়ের আগে নোটিস দিতে হয়। রূপশ্রী প্রকল্পে আবেদনকারীকে আবেদনপত্রের সঙ্গে সেই নোটিসের প্রতিলিপি জমা দিতে হবে।’ অসীম বলেন, ‘ম্যারেজ রেজিস্ট্রি হয়ে গেলে আর রূপশ্রীর টাকা কিন্তু মিলবে না। আবেদন জানাতে হবে বিয়ের আগেই।’ তাতেও কাটেনি ধোঁয়াশা।

    একাধিক কাউন্সিলার বিষয়টি স্পষ্ট করার দাবি তোলেন। পরিস্থিতি হালকা করতে মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার জানতে চান, ‘রূপশ্রী প্রকল্পে বিয়ের বয়সের ঊর্ধ্বসীমা আছে কি?’ মিতালির উত্তর, ‘না থাকলেও আমরা চাই ১৮ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে বিয়ে হোক। পুরোটাই রাজ্য সরকারের নিয়ম।’ অবশেষে বিষয়টি স্পষ্ট করে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘বিয়ের সঙ্গে নারীর নিরাপত্তার বিষয়টি যুক্ত। আমরা তা এড়িয়ে যেতে পারি না। তাই দেশের আইন অনুসারে রেজিস্ট্রি ম্যারেজ বাধ্যতামূলক। রূপশ্রীর ক্ষেত্রেও তাই।’

  • Link to this news (এই সময়)