• শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত শিক্ষা সেলের দুই নেতা
    এই সময় | ২১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এই সময়: ‘দলবিরোধী কাজ’–এর অভিযোগে তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত হলেন দলের অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার সহ–সভাপতি মণিশঙ্কর মণ্ডল। তৃণমূলের মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি প্রীতম হালদারের ক্ষেত্রেও শুক্রবার একই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জোড়াফুল নেতৃত্ব। তার আগে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল কলেজ অ্যান্ড ইউনিভার্সিটি প্রফেসর্স অ্যাসোসিয়েশন’–এর (ওয়েবকুপা) সহ–সভাপতি মণিশঙ্করকে সমস্ত পদ থেকে অপসারণও করা হয়।

    কেন এই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত?

    তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘এটা একেবারেই সাংগঠনিক বিষয়। দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব ও শাখা সংগঠন শিক্ষাসেল আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিক্ষাসেলের চেয়ারম্যান আবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই শিক্ষাসেল কয়েকজনকে দল এবং সংগঠনের যাবতীয় পদ থেকে অপসারণ করেছে। তাঁদের বহিষ্কারও করা হয়েছে।’

    কুণালের সংযোজন, ‘অগস্ট থেকে আরজি কর নিয়ে রাজ্য সরকার, তৃণমূল এবং মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যখন বিরোধীরা আক্রমণ শানাচ্ছে, তখন আমরা সবাই মিলে তা ঠেকাতে মরিয়া ছিলাম। বিরোধীরা যখন সরকার ও দলের বিরুদ্ধে কুৎসা করছেন, তা থেকে ফোকাস সরিয়ে অন্য কোনও রকম প্রবণতাকে বিশৃঙ্খল আচরণ বলে দল মনে করতেই পারে। দলীয় নেতৃত্বের মনে হতেই পারে, ওদের আচরণ বিভ্রান্তিকর ও শৃঙ্খলা বিরোধী।’

    তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অনুগামী বলে নিজের পরিচয় দিতেন মণি। লোকসভা ভোটে তৃণমূলের বিপুল জয়ের পর কলকাতার নানা জায়গায় অভিষেকের ছবি দিয়ে ‘দ্য গেম চেঞ্জার দাদা’ বলে পোস্টারও লাগিয়েছিলেন মণি ও তাঁর সঙ্গীরা।

    আরজি করের ধর্ষণ–খুনের প্রতিবাদে প্রাক্তন আমলা তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার ইস্তফা দেওয়ার পরে মণি সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, ‘জহরের বার্তা (থেকে) নিতে হবে সতর্কতা। অভিষেকদাকে দরকার, গড়তে বলিষ্ঠ সরকার।’ বিভিন্ন গণমাধ্যমেও একই দাবি জানান মণিশঙ্কর। তাঁর এই সব বক্তব্য ও স্লোগানকে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমর্থন ও শেয়ার করেছিলেন প্রীতমও। সূত্রের দাবি, এগুলো একেবারেই ভালো ভাবে নেননি তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব। তাই তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশেই দলের শিক্ষা সেল এই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

    যদিও মণির কথায়, ‘তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই অভিষেকদাকে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক করেছেন। তা হলে অভিষেকদার গুণগান করলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে কেন?’ যদিও তিনি এ দিন সন্ধে পর্যন্ত দল থেকে বহিষ্কার এবং ওয়েবকুপার পদ থেকে অপসারণের কোনও চিঠি হাতে পাননি বলে বলে দাবি করেছেন। প্রীতমের কথায়, ‘আমরা অভিষেক–সেনা, আমাদের দমানো যাবে না।’

  • Link to this news (এই সময়)