এই সময়, শান্তিনিকেতন: কিউআর কোড স্ক্যান করলেই জানা যাবে পৌষমেলার হালহকিকত। পাঁচ বছর পরে শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লির মাঠে হতে চলেছে পৌষমেলা। ২০১৯ সালের পর এ বারই প্রথম মেলার আয়োজন করছে বিশ্বভারতী, যা ঘিরে স্থানীয় বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ীদের উৎসাহ চরমে। পৌষমেলার জন্য কিউআর কোড প্রকাশ করছে বীরভূম জেলা পুলিশ। যা স্ক্যান করলেই জানা যাবে, মেলা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য।
এমনকী, কোনও সমস্যায় অভিযোগও দায়ের করা যাবে। এ বারই প্রথম মেলার মাঠ সমেত শান্তিনিকেতন ও বোলপুর শহরজুড়ে কিউআর কোড লাগাচ্ছে জেলা পুলিশ।
সম্ভাব্য ভিড়ের কথা মাথায় রেখে মেলায় নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে নানা পদক্ষেপ করছে জেলা পুলিশ-প্রশাসন। বিশেষ করে মেলায় আসা পর্যটক ও মহিলাদের নিরাপত্তায় যাতে কোনও খামতি না–থাকে, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে। শুক্রবার মেলার মাঠ পরিদর্শনে আসেন জেলার পুলিশ সুপার। তার আগে এ দিন সকালে মাঠ ঘুরে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায় ও এসডিপিও রিকি আগরওয়াল।
এ বছর পৌষমেলায় কড়া নিরাপত্তা থাকবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। প্রচুর সিভিক ভলান্টিয়ার, পুরুষ ও মহিলা পুলিশ কর্মী ও অফিসার মোতায়েন করা হচ্ছে। সংখ্যাটা প্রায় দু’হাজার। বসানো হবে ৩০০টি সিসিটিভি ক্যামেরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সব মিলিয়ে ১২টি অ্যান্টি ক্রাইম টিম সাদা পোশাকে মেলার মাঠে ঘুরে নজরদারি করবে।
সাধারণের মধ্যে মিশে খোঁজ নেবে কোথাও কোনও অশান্তি হচ্ছে কি না। তার মধ্যে ইভটিজ়িং আটকাতে সক্রিয় থাকবে চারটি অ্যান্টি ক্রাইম টিম। একই সঙ্গে মেলার মাঠে কন্ট্রোলরুম, ওয়াচ টাওয়ার, সিসি ক্যামেরা ও ড্রোনের মাধ্যমেও নজরদারি চালানো হবে।
আগামিকাল, রবিবার, সকালে ছাতিমতলায় পৌষমেলার সূচনা হবে। এ ক’দিন যানজট এড়াতে ডাকবাংলো মাঠের চারপাশে নো-এন্ট্রি করা হচ্ছে। মেলা চলাকালীন শহরের ভিতরে যাতে ভারী পণ্যবাহী গাড়ি ঢুকতে না-পারে, দেখা হবে তা-ও। টোটো চলাচলের ক্ষেত্রেও বেশ কিছু রুট বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘মানুষ যাতে সুষ্ঠু ভাবে মেলা উপভোগ করতে পারেন, তার জন্য পুলিশের তরফে সব রকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে। থাকছে কিউআর কোডও, যাতে কারও কোনও সমস্যা না–হয়।’
২০১৯ সালে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট এবং বিশ্বভারতীর আয়োজনে পূর্বপল্লির মাঠে শেষ বার হয়েছিল পৌষ মেলা। ২০২০ সালে করোনা আবহে মেলা হয়নি। ২০২১–২০২২ সালে মেলা করেনি বিশ্বভারতী। বিদ্যুৎ চক্রবর্তী উপাচার্য থাকাকালীন বোলপুর ডাকবাংলো ও স্টেডিয়াম মাঠে হয়েছিল বিকল্প পৌষমেলা। বিদ্যুতের মেয়াদ শেষ হতেই পূর্বপল্লির মাঠে ফিরে আসে পৌষমেলা। তবে গত বারও সেই মেলার আয়োজন করেনি বিশ্বভারতী। শর্তসাপেক্ষে জেলা প্রশাসনকে মেলা করার জন্য পূর্বপল্লির মাঠ দিয়েছিল তারা। ভার্চুয়ালি সেই মেলার উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার বিশ্বভারতীর উদ্যোগে ফের হতে চলেছে পৌষমেলা।