• শীত পড়তেই ঘাটালের ভিড় করছে পরিযায়ী পাখির দল
    বর্তমান | ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, ঘাটাল:  শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই  ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন ঝিল ও জলাশয়ে পরিযায়ী পাখির দল আসতে শুরু করেছে। আর সেই পাখিদের দেখার জন্য   ভিড় জমছে ঘাটাল মহকুমার  বিভিন্ন জায়গায়।  পরিযায়ী পাখিরা যাতে নির্বিঘ্নে এই শীতের মরশুমে এই মহকুমা থাকতে পারে সেই বিষয়ে বিশেষ পদক্ষেপ নিচ্ছে বনদপ্তর। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বনদপ্তরের ডিএফও(খড়্গপুর) মনীষকুমার যাদব বলেন, ‘পরিযায়ী পাখিগুলিকে যাতে কেউ বিরক্ত বা উত্যক্ত না করে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই আমরা সচেতনতামূলক প্রচার শুরু করেছি। এই প্রচারের পরিধি আরও বাড়িয়ে তুলতে কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে সঙ্গে নেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে।’


    ঘাটাল মহকুমার অনেক জায়গাতেই কম-বেশি ওই পরিযায়ী পাখি আসে। সেই সমস্ত জায়গাগুলির মধ্যে ঘাটাল শহর লাগোয়া হরিসিংপুর ইকো ট্যুরিজম পার্কে এবং ঘাটাল শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কেঁদুর জলাশয়ে পরিযায়ী পাখির সংখ্যাটা তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি। তবে হরিসিংহপুরের পার্ক লাগোয়া ঝিলটি হওয়ায় ওখানের পরিযায়ী পাখির খবর অনেকের কাছে থাকলেও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কেঁদুর জলাশয়ে যে প্রতিবছর বেশ কয়েক হাজার পরিযায়ী পাখি আসে সেই খবর অনেকের কাছেই নেই। 


    ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা আশিস দে ও সুপ্রিয় বেরা বলেন, ‘ওখানে এক এক সময় একসঙ্গে পাঁচ থেকে ১০ হাজারেরও বেশি পাখি দেখা যায়। শামুকখোল সহ বিভিন্ন রকমের পাখির দেখা মেলে। পরিযায়ী পাখি এলাকায় আসতে শুরু করলেই বেশ কিছু দুষ্কৃতী পাখিগুলিতে বিভিন্নভাবে ধরে মেরে খাবার চেষ্টা করে বলে বিভিন্ন মহলের অভিযোগ। শামুকখোল পাখির ওজন যেহেতু অনেকটাই বেশি ওই পাখির মাংস খাওয়ার জন্য রাতে কেউ ফাঁদ পেতে রাখছে, কেউ বা জলাশয়ের ধারে মাছ ধরার কাঁটায় কীট-পতঙ্গ দিয়ে টোপ ফেলে রাখে। কীটনাশক দিয়ে পরিযায়ী পাখি মারার ঘটনাও অন্যান্য বছর ঘটেছে। বনদপ্তরের আধিকারিকরা জানান, এই ধরনের দুষ্টচক্রের মানুষের জন্যই তাঁরা ভীষণ উদ্বেগে রয়েছেন। প্রত্যেক বছর  পাখি ধরে নেওয়ার বহু অভিযোগ বনদপ্তরের কাছে যায়। তাই এবছর তাঁরা অনেক আগে থেকেই সতর্ক রয়েছেন। প্রত্যেকটি জায়গায় সতর্কতামূলক প্রচারও চালানো হবে। পুলিসকে বিষয়টি জানিয়ে রাখা হয়েছে। এলাকায় এলাকায় বনদপ্তরের কর্মীদের নিয়মিত পাহারাও ব্যবস্থা করা হবে।  


    যেখানে যেখানে পরিযায়ী পাখিগুলি আস্তানা তৈরি করে তার পাশাপাশি এলাকাতেই সাধারণত পিকনিক স্পট গড়ে ওঠে। শীতের সময় পিকনিক করতে গিয়ে অনেকেই ডিজে বাজান, বাজি ফাটান। বিকট শব্দে পরিযায়ী পাখিদের সমস্যা হয়। ধারাবাহিক শব্দ হলে পরিযায়ী পাখিগুলি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। ডিএফও’র আবেদন, ‘যারা পিকনিক করতে যাবেন তাঁরা এমন কিছু করবেন না যার ফলে পরিযায়ী পাখিদের সমস্যা হয়। তাই পিকনিক করতে গিয়ে তারস্বরে বক্স, মাইক বাজাবেন না বা বাজি ফাটাবেন না। প্রকৃতিতে পরিযায়ী পাখিদের সুষ্ঠুভাবে বাঁচতে সহযোগিতা করুন।’
  • Link to this news (বর্তমান)