সংবাদদাতা, সিউড়ি: সিউড়ি পুরসভার নামে ভুয়ো চেক ব্যাঙ্কে জমা দিয়ে টাকা লোপাটের চেষ্টা করা হল। কালিম্পং পুরসভার নামে প্রায় ন’লক্ষ টাকার চেক জালিয়াতি ধরা পড়ল। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হওয়ায় চেক জালিয়াতি রুখে দেয়। সিউড়ি পুরসভার তরফে কালিম্পং পুরসভাকে ইস্যু করা এই জাল চেক কীভাবে কাদের মদতে ব্যাঙ্কে পৌঁছল তা নিয়ে তদন্তে নামছে পুরসভা ও পুলিস। শনিবার চেক জালিয়াতির ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরসভার নামে দু’টি চেক সিউড়ির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে জমা পড়েছিল। দু’টি চেকই ১৯ নভেম্বর ইস্যু করা হয়েছিল কালিম্পং পুরসভার নামে। কিন্তু পুরসভার দাবি, ওই দু’টি নম্বরের চেক পুরসভার অ্যাকাউন্টে এখনও ফাঁকা অবস্থাতেই রয়েছে। এমনকী এর আগের সিরিয়ালেরও বেশ কয়েকটি চেক রয়েছে পুরসভার কাছে। কিন্তু বেশ কয়েকটি সিরিয়াল পেরিয়ে এই নির্দিষ্ট নম্বরের দু’টি চেক নিয়ে সন্দেহ হয় ব্যাঙ্কের। তাতেই ধরা পড়ে চেক দু’টি জাল। এরপরই ব্যাঙ্কের আধিকারিকরা পুরসভাকে ফোন করে জানতে চায়, আদৌ ওই নম্বরের কোনও চেক পুরসভার তরফে ইস্যু করা হয়েছিল কিনা। পুরসভা সম্মতি না দেওয়ায় পেমেন্ট আটকে দেওয়া হয়। এই চেক দু’টির একটিতে চার লক্ষ ৬৯হাজার এবং আরেকটিতে চার লক্ষ ৬২হাজার টাকা উল্লেখ করা ছিল। দু’টি চেকই কালিম্পং পুরসভার নামে ইস্যু করা হয়েছিল। পুরসভার দাবি, কালিম্পং পুরসভাকে টাকা দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।
চেক জালিয়াতি নিয়ে পুরসভার আধিকারিরা হতবাক। তাঁদের একাংশের মতে, এই ঘটনার সঙ্গে পুরসভার কোনও কর্মীর যোগ থাকতে পারে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, চেক ইস্যুর বিষয়টি দেখেন পুরসভার অ্যাকাউন্ট্যান্ট এবং এগজিকিউটিভ অফিসার। দু’টি চেকে তাঁদের সই রয়েছে। সেই সই জাল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুরসভার অ্যাকাউন্ট্যান্ট সীতাংশু ভট্টাচার্য বলেন, ব্যাঙ্কের তরফে সন্দেহ হওয়ার পরই আমাকে ফোন করা হয়েছিল। আমরা সাফ জানিয়েছি, এমন কোনও চেক ইস্যু করা হয়নি। ওই দু’টি নির্দিষ্ট নম্বরের চেক আমাদের কাছে রয়েছে। যা এখনও ইস্যু করা হয়নি। ব্যাঙ্কের তরফেও আধিকারিকরা পুরসভায় এসে তদন্ত করে দেখেন। বিষয়টি পুলিসকে জানানো হয়েছে। পুরসভার চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, কালিম্পং পুরসভার নামে চেক কাটা হয়েছে কিনা জানার জন্য ব্যাঙ্কের তরফে আমাদের কাছে ফোন এসেছিল। এই ধরনের চেক দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছি। পুরসভার নামে ভুয়ো চেক দিয়ে কেউ সরকারি টাকা লোপাটের চেষ্টা করেছিল। আমি ব্যক্তিগত কারণে রাজ্যের বাইরে রয়েছি। মৌখিকভাবে পুলিসকে জানিয়েছি। সিউড়ি ফিরে পুলিসের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাব।