অনলাইনে বড়মা’র পুজোর নাম করে কয়েক লক্ষ টাকার প্রতারণা, রিষড়ায় গ্রেপ্তার ১
বর্তমান | ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাকপুর: নৈহাটির বড়মা মন্দিরে অনলাইনে পুজো দেওয়ার টোপ দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বড়মা মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করা হয়। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিস হুগলির রিষড়ার ষষ্ঠীতলার বাসিন্দা সুরজিৎ কুণ্ডুকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতের কাছ থেকে একটি মোবাইল, ল্যাপটপ, ব্যাঙ্কের পাশবই বাজেয়াপ্ত করা হয়। তাকে শনিবার বারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে তিনদিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই চক্রের সঙ্গে আর কে কে জড়িত রয়েছে, তা জানতে চায় পুলিস। সমস্ত কিছুই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
নৈহাটির অরবিন্দ রোডের উপরে বড়মার মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কষ্টিপাথরের মূর্তি। যার উদ্বোধন হয়েছিল গত বছরে। এছাড়া মায়ের নবনির্মিত মন্দিরও তৈরি হয়েছে। তারপর থেকেই ভিড় বাড়তে শুরু করেছে বড়মার এই মন্দিরে। গত ২৬ নভেম্বর বড়মা’কে পুজো দিতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্যোশাল মিডিয়ার সৌজন্যে রাজ্যের একাধিক জেলা, এমনকী দেশ-বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে পুজোর অনুরোধ আসতে শুরু করে বড়মা মন্দির কমিটির কাছে। ভক্তদের অনুরোধে সাড়া দিয়ে অবশেষে অনলাইনে তাঁদের পুজোর ব্যবস্থা করে বড়মা মন্দির কমিটি। এমনিতেই কালীপুজোর সময় মায়ের ২২ ফুট উঁচু প্রতিমা নির্মাণ দেখতে লক্ষাধিক ভক্ত সমাগম হয়। তাই কালীপুজোর ক’দিন কোনও ভক্তই যাতে পুজো দেওয়া থেকে বঞ্চিত না-থাকেন, সেই ভাবনা থেকেই মন্দির কমিটি অনলাইন অ্যাপ তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই সুযোগে ‘বড়মা পুজা লাইন’ নামে একটি অনলাইন অ্যাপ খুলে প্রতারণা চক্র ফেঁদে বসে রিষড়ার সুরজিৎ কুণ্ডু। বিদেশের এক ভক্তের ফোন পেয়ে এই প্রতারণা চক্রের সন্ধান পান বড়মা পুজো কমিটি ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক তাপস ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, বিদেশ থেকে এক ভক্ত ফোন করে বলেন, অনলাইনে পুজো পাঠিয়েছি, সেই অ্যাপে টাকার অঙ্ক লেখা রয়েছে। যা শুনে আমি চমকে যাই। আমাদের অনলাইনে কোন টাকার অঙ্ক লেখা থাকে না। প্রতারকের অ্যাপে পুজো দেওয়ার জন্য টাকার অঙ্ক হিসেবে ১০০১, ২৫০১, ৫০০১ টাকা লেখা রয়েছে। যা শুনে আমার সন্দেহ হয়। বড়মাকে নিয়ে ভক্তদের আবেগের সুযোগ নিয়ে ওই ব্যক্তি দিনের পর দিন প্রতারণা করেই চলেছিল। বিষয়টির সত্যতা জানতে পেরে আমরা নৈহাটি থানায় অভিযোগ করি। এরপরই ওই ব্যক্তিকে পুলিস গ্রেপ্তার করেছে।