• দুর্নীতির গঙ্গাসাগর! বালুর বিরুদ্ধে নতুন যুক্তি ইডি-র
    এই সময় | ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এই সময়: এক সপ্তাহ আগে তাঁকে ‘কিং মেকার’ বলে আদালতে দাবি করেছিল ইডি। আর শনিবার এই কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, তিনি আসলে ‘রিং মাস্টার’।

    রেশন দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালুর জামিন আটকাতে মরিয়া ইডি এ ভাবেই আদালতে সওয়াল করল। এ দিন তাঁর জামিনের আর্জির শুনানি ছিল ব্যাঙ্কশাল কোর্টে ইডির বিশেষ আদালতে। সেখানে ইডির কৌঁসুলির সওয়াল, রেশন দুর্নীতি মামলাকে যদি উপর থেকে পাখির চোখে দেখা যায় তা হলে বালুকে দেখাবে ‘গঙ্গাসাগর’–এর মতো। গঙ্গাসাগরে যেমন অনেক নদীর শাখাপ্রশাখা এসে মেশে, ঠিক তেমন ভাবে রেশন দুর্নীতির সমস্তটা গিয়ে মিশেছে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর কাছে। উনি আসলে ‘রিং মাস্টার’। আড়ালে থেকে পুরোটাই পরিচালনা করেছেন বালু— অভিযোগ ইডির।

    এই মামলায় শুরু থেকেই ইডির তরফে দাবি করা হচ্ছিল, রেশনের চাল, গম, আটা বিক্রির সব টাকা ঘুরপথে গিয়েছে বালুর কাছেই। প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর পরিচালিত তিনটি সংস্থা আর্থিক ভাবে লাভবান হয়েছে এই দুর্নীতিতে। এ দিনও সেই একই যুক্তি দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাদের দাবি, যে সময়ে রেশনে দুর্নীতি হয়েছে, ওই সময়ে বালু ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী। ফলে, প্রভাব খাটাতে তারঁ বিশেষ অসুবিধে হয়নি। বালুর আইনজীবী পাল্টা যুক্তি দেন, শু‘রু থেকেই আমার মক্কেল তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করে আসছেন। ওঁর বিরুদ্ধে নতুন করে তথ্যপ্রমাণ সামনে আনতে পারেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। যে কোনও শর্তে ওঁকে জামিন দেওয়া হোক।’

    তাঁর সংযোজন, এই মামলায় কয়েকজন ইতিমধ্যেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন। তা ছাড়া বালু শারীরিক ভাবে অত্যন্ত অসুস্থ বলেও জানানো হয়। যদিও ইডির কৌঁসুলির দাবি, রেশন দুর্নীতির অভিযোগপত্রে বালুর নাম প্রথমে ছিল না। পরবর্তীকালে তদন্ত যত এগিয়েছে, প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে একাধিক নথি হাতে এসেছে। উনি জামিন পেলে তদন্ত প্রভাবিত হবে। আগামী ২ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন বিচারক।

    গত বছর ২৭ অক্টোবর রেশন দুর্নীতি মামলায় বালুুকে গ্রেপ্তার করেছিল ইডি। গ্রেপ্তারির পরে প্রথমে অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী। এরপর হাসপাতালে কিছুদিন ছিলেন তিনি। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তিনি রয়েছেন প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে। সম্প্রতি জামিন চেয়ে আবেদন করেন বালু। গত ১১ ডিসেম্বর ওই মামলার শুনানিতে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীকে প্রভাবশালী বলে দাবি করে ইডি। যার পাল্টা বালুর আইনজীবী জানান, ‘উনি বহুদিন রাজ্যের মন্ত্রী নন। তাহলে কী করে উনি প্রভাবশালী?’

    যার জবাবে ইডির আইনজীবীর বক্তব্য ছিল, ‘রাজনৈতিক দিক থেকে এখনও প্রভাব খাটাতে পারেন জ্যোতিপ্রিয়। রাজা না হলেও যাঁর রাজা তৈরির মতো ক্ষমতা রয়েছে। একাধিক ঘটনায় উনি যে প্রভাবশালী, সেই প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।’

  • Link to this news (এই সময়)