এই সময়: কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে ধান ক্রয়ের ক্ষেত্রে দালালদের বিষয়ে পুলিশকে সতর্ক করল নবান্ন। প্রতিটি থানাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যেখানে সরকারি ধান ক্রয়কেন্দ্র খোলা হবে তার আশপাশে কোনও ভাবে অবাঞ্ছিত ব্যক্তি বা দালালদের যাতে যাতায়াত না থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে। কেউ ধান বিক্রি করতে আসা কৃষকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে পুলিশকে। এ জন্য ধান কেনা নিয়ে নজরদারিতে ব্লকস্তরে বিডিওর নেতৃত্বে গঠিত মনিটারিং কমিটিতে থানার ওসি বা আইসিকে রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ধুলো–ময়লা, নষ্ট হয়ে যাওয়া ধানের হিসেব ধরে কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি কুইন্টাল ধানের জন্য তিন কিলো অতিরিক্ত ধান নেওয়ার কথা। কিন্তু দেখা গিয়েছে অনেক ক্ষেত্রেই তিনের বদলে পাঁচ কিলো করে অতিরিক্ত ধান নেওয়া হয়েছে। অতীতে প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে ধান কিনে দালালরাই কৃষকের পরিচয় দিয়ে সরকারের কাছে সহায়ক মূল্যে ধান বেচে লাভবান হয়েছে। শুধু দালাল চক্রই নয়, এ নিয়ে সরকারি ধান ক্রয়কেন্দ্রের পারচেজ় অফিসারদের একাংশের ভূমিকা নিয়েও নানা সময়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এ সব আটকাতে এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পারচেজ় অফিসাররা ঠিক মতো কাজ করছেন কি না, তার নজরদারিতে গুরুত্ব দিচ্ছে খাদ্য দপ্তর। বিডিওদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনা নিয়ে সরকারি নিয়ম কার্যকরে কোনও পারচেজ় অফিসার বিচ্যুত হলেই সঙ্গে সঙ্গে তা এসডিও বা মহকুমার খাদ্য নিয়মককের নজরে আনতে হবে।
খাদ্য দপ্তর ধান ক্রয়কেন্দ্র খোলা ও নজরদারিতে জেলা, মহকুমা ও ব্লকস্তরে মনিটারিং কমিটি গঠন করেছে। ব্লকস্তরে ধান ক্রয়কেন্দ্র কোথায় খুলতে হবে তা ঠিক করবে এই কমিটি। শুধু তাই নয়, প্রত্যন্ত এলাকার চাষিদের সুবিধার জন্য ভ্রাম্যমাণ ক্রয়কেন্দ্র কোথায় কোথায় যাবে, তারও রূপরেখা তৈরি করে দেবে এই কমিটি। কাজ ঠিক মতো হচ্ছে কি না, তা সরেজমিনে দেখতে বিডিওদের সারপ্রাইজ় ভিজ়িটের পরামর্শ দিয়েছে খাদ্য দপ্তর। ডিএমদেরও বলা হয়েছে পিক সিজ়িনে ডেপুটি মেজিস্ট্রেটদের দিয়ে সারপ্রাইজ় ভিজ়িটের ব্যবস্থা করতে।
এর পাশাপাশি সরকারি নির্দেশিকায় পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সরকারি ধান ক্রয়কেন্দ্রগুলি খোলার আগে পর্যাপ্ত প্রচার চালাতে হবে। যাতে আগে থেকে চাষিরা জানতে পারেন কোথায় কবে এই কেন্দ্র খোলা হচ্ছে। নূন্যতম সহায়ক মূল্য কত। সরকারি কেন্দ্রে ধান বিক্রি করতে হলে কী কী কাগজ আনতে হবে ইত্যাদি। সকলে যাতে ক্রয়কেন্দ্রে শুকনো ও পরিষ্কার ধান আনেন সে ব্যাপারেও সচেতন করতে বলা হয়েছে। এর পরেও ধান কেনার সময়ে গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তার সমাধান করবেন বিডিওরা।