রেশন পেতে থাকতেই হবে মোবাইল ফোন! খাদ্য দপ্তরের পোর্টালে মোবাইল নম্বর নথিভুক্ত না থাকলে এ বার থেকে আর রেশন পাবেন না গ্রাহকরা। খাদ্য দপ্তরের তরফে রেশন ডিলারদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, রেশন কার্ডের সঙ্গে মোবাইল নম্বর লিঙ্ক করা না থাকলে কাউকে রেশন দেওয়া যাবে না। এই সিদ্ধান্ত ঘিরে প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

প্রশ্ন উঠেছে, মোবাইল ফোন না থাকলে কাউকে কি রেশনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা যায়? খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকরা অবশ্য যুক্তি দিচ্ছেন, রেশনের সামগ্রী যাতে বেহাত না হয়, সে জন্যেই এই ব্যবস্থা। এর ফলে একজনের রেশন অন্যজন তুলতে পারবেন না। অন্য কেউ রেশন–সামগ্রী তুললেও আসল গ্রাহকের কাছে মেসেজ চলে যাবে। তিনি সতর্ক হবেন।

খাদ্য দপ্তরের তথ্য, রাজ্যে প্রায় ২ কোটি ৯০ লক্ষ পরিবারের রেশন কার্ড রয়েছে। তার মধ্যে ১ কোটি ৩২ লক্ষ পরিবারের মোবাইল নম্বর লিঙ্ক করা সম্ভব হয়েছে। বাকি রয়েছে ১ কোটি ৫৮ লক্ষ পরিবার। সেই কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্যে কয়েক দিন আগে নির্দেশিকা জারি করেছে খাদ্য দপ্তর। তাতে বলা হয়েছে, প্রতি পরিবার থেকে কোনও এক জন সদস্যের মোবাইল নম্বর বাধ্যতামূলক ভাবে পোর্টালে নথিভুক্ত করতে হবে।

কেউ যখন রেশন তুলতে যাবেন তখনই তাঁর কাছ থেকে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে ই–পস মেশিনে নথিভুক্ত করবেন ডিলাররা। যদি কারও মোবাইল নম্বর অন্য কোনও পরিবারে এক বার নথিভুক্ত হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে দ্বিতীয় বার সেটা আর ব্যবহার করা যাবে না। ডিলাররা নিজেদের মোবাইল নম্বর অথবা পরিবারের কোনও সদস্যের ফোন নম্বর কোনও রেশন–গ্রাহককে দিতে পারবেন না।

এই নয়া বিজ্ঞপ্তিতে রীতিমতো ফাঁপরে ডিলাররা। তাঁদের বক্তব্য, গ্রামের দিকে অনেকেরই মোবাইল ফোন নেই এখনও। যাঁদের মোবাইল ফোন নেই, সরকারি আদেশে তাঁদের রেশন দেওয়া যাবে না। এ নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হচ্ছে। ডিলারের উপরে চড়াও হচ্ছেন গ্রাহকরা।

অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশনের সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসুর বক্তব্য, ‘খাদ্য দপ্তরের এক শ্রেণির অফিসার এমন কিছু নিয়মকানুন চালু করতে চাইছেন যেগুলি অবাস্তব। এতে সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়ছেন। ভোগান্তি হচ্ছে ডিলারদের। আইনে কোথাও বলা নেই, রেশন পেতে মোবাইল থাকতে হবে। বরং সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, রেশনের সুবিধা থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যায় না।’

খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের অবশ্য ব্যাখ্যা, ‘এখন সবার হাতেই মোবাইল ফোন। মোবাইল নম্বর লিঙ্ক করা থাকলে একজন অন্যের রেশন তুলতে পারবেন না। রেশন–সামগ্রী তোলার সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলে মেসেজ চলে যাবে। তিনি কতটা সামগ্রী পাচ্ছেন সেটাও জেনে যাবেন। ডিলাররা ঠকাতে পারবেন না।’