• অচলাবস্থা কাটাতে উদ্যেগী প্রকাশ, বক্সা থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন পর্যটকরা
    এই সময় | ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এই সময়,আলিপুরদুয়ার: বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ভিতরে ও সংলগ্ন এলাকার মধ্যে থাকা সমস্ত হোটেল, রিসর্ট ও হোম স্টে বন্ধ করতে বন দপ্তরের নোটিস জারির পর পর্যটনের ভরা মরসুমে অনিশ্চয়তার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বক্সা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন পর্যটকরা। ওই অচলাবস্থা কাটাতে রবিবার বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের একুশ মাইলে স্থানীয় স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে একটি বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ প্রকাশ চিকবরাইক।

    কিন্তু তাতে এই অনিশ্চয়তা কতটা কাটবে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। বক্সায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে গ্রিন ট্রাইব্যুনালের রায়ের উপর কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ নতুন করে স্থগিতাদেশ জারি করেনি। এর পরই বন দপ্তর পরিবেশ আদালতের রায়কে কার্যকর করতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে।

    অন্যদিকে ২৩ ডিসেম্বরকে পাখির চোখ করেছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। কারণ ওই দিন কলকাতা হাইকোর্টে পরিবেশ আদালতের রায়ের উপর একটি বিশেষ শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানিয়ে দিয়েছেন যে, যদি ওই শুনানিতে স্থগিতাদেশ না মেলে তবে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন।

    দোলাচলের ওই পরিস্থিতিতে প্রতিদিন নিরাশ হতে হচ্ছে হাজার হাজার পর্যটককে। কারণ বন দপ্তরের নোটিসে এই মুহূর্তে বক্সার অন্দরে থাকা হোটেল, হোম স্টে ও রিসর্টগুলিতে রাত্রিবাস বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, শীতকালে প্রতিদিন বক্সায় আসেন গড়ে দু’হাজার পর্যটক।

    কিন্তু বন দপ্তরের গেরোয় এবার পর্যটকদের আনাগোনা প্রায় বন্ধ হওয়ার মুখে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রচুর আর্থিক লোকসানের মুখে পড়েছেন পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত দশ হাজারেরও বেশি মানুষ। পর পর বুকিং বাতিল রুখতে স্থানীয় পর্যটন সংস্থাগুলি বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে পর্যটকদের আলিপুরদুয়ার শহরের হোটেলগুলিতে রাখার ব্যবস্থা করছে।

    কিন্তু তাতে নাকি সিংহভাগ পর্যটকরাই আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। নোটিস জারির পর বন দপ্তরের ভূমিকা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন পর্যটনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা। একটি হোম স্টের কর্ণধার শুভজ্যোতি বসু বলেন ‘আদালতের নির্দেশ মেনে আমরা হোম স্টে আপাতত বন্ধ করে দিয়েছি। যার জন্য পর্যটনের ভরা মরসুমে আমাদের দারুন আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। আমার প্রশ্ন রাজাভাতখাওয়া রেল কোচ রেস্টুরেন্টে কোন আইনের বলে খোলা আছে? একদিকে বলা হচ্ছে বক্সায় সব ধরনের বাণিজ্যিক কাজ বন্ধ রাখতে হবে, অন্যদিকে জিপসি সাফারি চালু রাখছে বন দপ্তর।’

    তাঁর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অন্ধকারে রেখে স্থানীয় কিছু বনকর্তা পর্যটন বিরোধী আচরণ করে যাচ্ছেন।’ তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ প্রকাশ চিকবরাই বলেন, ‘বক্সায় এক ধরনের অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। আমি সেখানকার মানুষদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের জন্য উদ্যোগ নিয়েছি। দরকারে গোটা পরিস্থিতি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’ বন দপ্তরের নেটিস ইস্যুর সিদ্ধান্ত নিয়ে শনিবার নতুন করে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের বনাধিকারিকরা।

  • Link to this news (এই সময়)