এই সময়, কালনা: মুহর্মুহু বদলে যাচ্ছে তাপমাত্রা। ডিসেম্বরে ভালো ঠান্ডার পরই ফের তাপমাত্রায় গরমের ছোঁয়া। এখন আবার নিম্নচাপের দৌলতে ঝিরঝিরে বৃষ্টি। সঙ্গে কুয়াশা। বার বার বদলে যাওয়া এমন আবহাওয়ায় কপালে চিন্তার ভাঁজ আলুচাষিদের। এমন আবহাওয়াতেই দেখা দেয় নাবিধসার আশঙ্কা।
শনিবার দিনভর তেমন আবহাওয়া থাকায় এখন চিন্তিত চাষিদের রাতের ঘুম ছুটেছে। একে আলুর আগুনে দাম, তার উপরে নাবিধসা দেখা দিলে ক্ষতি হবে মারাত্মক। এমন পরিস্থিতিতে চাষিদের সতর্ক করছে কৃষি দপ্তরও। প্রতিকূল আবহাওয়ায় আলুর জন্য নির্ধারিত ছত্রাকনাশক নিয়মিত স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।
কৃষি দপ্তরের আধিকারিক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘ঝিরঝিরে বৃষ্টি অথবা ঘন কুয়াশার প্রকোপ হলে ধসার আশঙ্কা বাড়ে আলুতে। জ্যোতির ক্ষেত্রে গাছ কিছুটা ছোট থাকলেও পোখরাজের ক্ষেত্রে এই আবহাওয়ায় সতর্কতা দরকার। আবহাওয়া প্রতিকূল হলে নাবিধসার প্রতিকার হিসেবে ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে।’
পূর্ব বর্ধমানে ৭২ হাজার হেক্টর জমিতে আলুচাষ হয়। সাধারণত ধান কাটার পর আলুচাষ শুরু করেন চাষিরা। ধান উঠতে এ বার দেরি হয়েছে। যার জেরে জ্যোতি আলুর চাষ কিছুটা দেরিতে শুরু হয়েছে জেলায়। তবে জ্যোতি ছাড়াও জেলার পূর্বস্থলী সমেত কিছু এলাকায় চাষ হয় পোখরাজ আলুরও।
সাধারণত জ্যোতি আলু ওঠার আগে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে পোখরাজ আলু পাওয়া যায় বাজারে। কিন্তু এ বার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পোখরাজের চাষও মাসখানেক পিছিয়েছে। চাষের প্রায় শেষ পর্যায়ে এমন আবহাওয়ায় সেই পোখরাজ নিয়েও চিন্তিত চাষিরা।
রানিপুরের আলুচাষি রামকৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ‘এমন আবহাওয়ায় ধসা লাগার আশঙ্কা থাকে। ধসা লেগে গেলে ফলন হবে না। চাষ এ বার একটু দেরিতে শুরু হয়েছে। এমন আবহাওয়া চলতে থাকলে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।’
পূর্বস্থলীর আলুচাষি বিমল মণ্ডলের বক্তব্য, ‘পোখরাজ আর জ্যোতি মিলিয়ে সাড়ে দশ বিঘা জমিতে আলুচাষ করেছি এ বার। প্রতি বিঘায় খরচ ৪০ হাজার টাকার কাছাকাছি। প্রতি বিঘা থেকে ৮০ থেকে ১০০ বস্তা আলু মেলে। গত মরশুমে দর মেলায় বিঘে প্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা লাভ পেয়েছিলাম। এ বার সামগ্রিক যা পরিস্থিতি তাতে আলুর দাম পাওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। তেমন হলে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।’