• ঝাড়গ্রাম ছেড়ে জ়িনাত এ বার পুরুলিয়ায়, ‘বাঘ বন্দি’ করতে প্রস্তুত ১৫টি দল, জঙ্গলে বাড়ছে ভয়
    এই সময় | ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ঝাড়গ্রামের ছেড়ে এ বার পুরুলিয়ার জঙ্গলে প্রবেশ করল বাঘিনি জ়িনাত। বন দপ্তর সূত্রে খবর, সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের জঙ্গলে বাঘের উপস্থিতি রেকর্ড হয়েছে। এর আগে জ়িনাত-কে বাগে আনার জন্য একাধিক টোপ দেওয়া হয়েছে বন বিভাগের তরফে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত নাগাল মেলেনি ওই বাঘিনির। উদ্বেগ বাড়িয়ে ঝাড়গ্রাম ছেড়ে পুরুলিয়ায় পৌঁছল সে। যদিও পুরুলিয়ার বন বিভাগ এই নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। সিমলিপাল, সুন্দরবন, পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম মিলিয়ে ১০টি প্রশিক্ষিত দল নজর রেখেছে বাঘিনি জ়িনাতের উপর। তাকে খাঁচাবন্দি করতে আরও ৫টি দলও পৌঁছে গিয়েছে পুরুলিয়ায়। বাঘটি যে পুরুলিয়ায় পৌঁছেছে তা নিশ্চিত করেছেন পুরুলিয়ার DFO অঞ্জন গুহ। ‘এই সময় অনলাইন’-কে তিনি বলেন, ‘বাঘটি লোকালয় থেকে অনেক অনেক দূরে রয়েছে। অহেতুক আতঙ্কের কারণ নেই। গুজবে কান দেবেন না। বাঘ খাঁচাবন্দি করতে আমরা সব ভাবে প্রস্তত।

    ওডিশার সিমলিপালের জঙ্গল থেকে ঝাড়খণ্ডে প্রবেশ করেছিল বাঘিনি জ়িনাত। এই বাঘিনির গলায় থাকা রেডিও কলারের তথ্য অনুযায়ী, ওড়িশার সীমানা পার করে ঝাড়গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে শুক্রবারই প্রবেশ করে সে। শনিবার যদিও কিছু সময় তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে ঝাড়গ্রামেই তার খোঁজ মেলে।

    অঞ্জন গুহ জানান, সুন্দরবন থেকেও বন বিভাগের একাধিক দল এসেছে বাঘিনিকে ধরার জন্য। কোনওভাবেই যাতে জ়িনাত লোকালয়ে চলে না আসে সেই জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘পুরুলিয়ার একেবারে দক্ষিণ দিকে গভীর জঙ্গল রয়েছে জ়িনাত। এই সময় অযোধ্যা পাহাড় সংলগ্ন এলাকায় প্রচুর পর্যটক আসেন। জঙ্গলটি ওই সমস্ত এলাকা থেকে অনেক দূরে। তাই অযোধ্যায় এলাকায় জ়িনাতের পৌঁছে যাওয়া সহজ হবে না।’

    কিন্তু কোন পথে বাঘ পুরুলিয়ায় পৌঁছল? ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, ‘ঝাড়গ্রাম জেলায় এখন বাঘিনি নেই। শনিবার গভীর রাতে বেলপাহাড়ি জঙ্গল থেকে পুরুলিয়ার জঙ্গলে চলে গিয়েছে।’ জানা গিয়েছে, ময়ূরঝর্ণা, বকডুবির জঙ্গলের সঙ্গেই রয়েছে পুরুলিয়ার জঙ্গল। শনিবার গভীর রাতে ময়ূরঝর্ণার জঙ্গল পেরিয়ে পুরুলিয়া জেলার রাইকার জঙ্গলে ঢুকে পড়ে সে। বন দপ্তরের একটি সূত্রে খবর, শাল জঙ্গলে ওই গভীর জঙ্গলে পুরোটাই সেডো জোনের আওতায়। ঠিকমতো কাজ করে না ইন্টারনেট পরিষেবা। গভীর জঙ্গলে যাওয়ার নেই কোনও রাস্তা। ফলে তাকে খুঁজে পাওয়া আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে যেতে পারে।

    উল্লেখ্য, এক মাসেরও কম সময় আগে মহারাষ্ট্রের আন্ধেরি–তাডোবার জঙ্গল থেকে জ়িনাতকে আনা হয়েছিল ওডিশার সিমলিপালে। গত ২৪ নভেম্বর সিমলিপাল টাইগার রিজ়ার্ভের মুক্ত জঙ্গলে ছাড়াও হয় তাকে। কিন্তু বছর তিনেকের জ়িনাতের বেশি দিন মন টেকেনি সেখানে। প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পার করে মঙ্গলবার সে এসে পৌঁছয় ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়ার জঙ্গল এলাকায়। এর পর ঝাড়গ্রাম হয়ে পুরুলিয়ার জঙ্গলে অবস্থান করছে সে। কোনওভাবেই বাগে আনা যাচ্ছে না জ়িনাতকে।

    তথ্য সহায়তা : বুদ্ধদেব বেরা, সঞ্চিতা ঘোষ, অরূপকুমার পাল

  • Link to this news (এই সময়)