স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের পথে কাঁটা ছিলেন স্বামী। অভিযোগ, সেই কাঁটা উপড়ে ফেলতে প্রেমিকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্বামীকে খুনের ছকও করেন হুগলির দেবানন্দপুরের ওই মহিলা এবং সফলও হন। আগেই এই তথ্য জানতে পেরেছিল পুলিশ। এ বার তাতে সংযোজন হল, ভাড়াটে খুনির তত্ত্বও। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, নিহত রমেশ মুদালিয়ার স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিক ৭০ হাজার টাকা দিয়ে তিন জন ভাড়াটে খুনি ঠিক করেন। গত বৃহস্পতিবার দেবানন্দপুর গ্রামপঞ্চায়েতের কানাগড়ের ভাঙা মসজিদ এলাকায় তারাই রমেশকে খুন করে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ি ফেরেননি রমেশ। পর দিন সকালে এক মহিলা ভাঙা মসজিদ এলাকায় রমেশের রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে। দেহে একাধিক ক্ষতচিহ্ন ছিল। এর পরই রমেশের সৎ মা নাগরানি মুদালিয়া চুঁচুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। জানান, বউমার অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। তা নিয়ে অশান্তি হতো সংসারে। রমেশের দাদা উমেশেরও অভিযোগ ছিল, দাদার ১০ বছরের বৈবাহিক জীবন। বউদির অন্য ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ঝামেলা হতো। লোক দিয়ে ওরাই খুন করিয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন উমেশও।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই রমেশের স্ত্রী সারদা মুদালিয়া ও সারদার মাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শনিবার চুঁচুড়া আদালতে তোলা হলে ধৃতদের ১০ দিনের জন্য হেফাজতে পায় পুলিশ। এর পরই জেরায় জেরায় উঠে আসে বিকাশ মোহালি নামে ব্যান্ডেলের এক যুবকের নাম। পুলিশ সূত্রে খবর, এই বিকাশের সঙ্গেই সারদার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল, যা নিয়ে তীব্র আপত্তি ছিল রমেশের। সারদার মা বিষয়টি জানলেও মেয়েকে কখনও না করেননি বলেই অভিযোগ। উল্টে মদত দিতেন। অভিযোগ, এই সারদা আর বিকাশই রমেশকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে।
অভিযোগ, ৭০ হাজার টাকা দিয়ে তিনজনকে ভাড়া করে এই কাজের জন্য। অভিযোগ, রমেশকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার দিন বিকাশ, রমেশ একসঙ্গে বসে মদ্যপানও করেন। তার পরই কুপিয়ে খুন করা হয়। এই ঘটনায় অভিযুক্ত তিন ভাড়াতে দুষ্কৃতীও ইতিমধ্যেই পুলিশের জালে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিকাশকেও। রবিবার চুঁচুড়া আদালতে তোলা হবে তাদের।