মিল্টন সেন: মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই খুনের ঘটনার পর্দাফাঁস করল চন্দননগর কমিশনারেট। মাত্র সত্তর হাজার টাকার বিমিময়ে ভাড়া করা হয়েছিল খুনিদের। হুগলির কানাগড়ে যুবক খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য পুলিশের হাতে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে দেবানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কানাগড়ের ভাঙা মসজিদ এলাকায় খুন হন রমেশ মুদালিয়া নামে এক যুবক। তার পরের দিন (শুক্রবার) ভোরে প্রাতঃভ্রমণ করতে বেরিয়ে স্থানীয় এক মহিলার নজরে পরে একটি ফাঁকা জায়গায় রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। উদ্ধার করা হয় মৃতদেহ। দেখা যায়, মৃতের শরীরে একাধিক ক্ষতচিহ্ন। যুবকের সৎ মা নাগরানী মুদালিয়া চুঁচুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে চুঁচুড়া থানা ও চন্দননগর পুলিশের গোয়েন্দারা মৃত যুবকের স্ত্রী সারদা মুদালিয়া ওরফে ভারতী ও শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করে। শনিবার তাদের চুঁচুড়া আদালতে পেশ করে দশ দিনে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, সারদার সঙ্গে ব্যান্ডেলের বিকাশ মেহালি নামে এক যুবকের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। যা নিয়ে রমেশ ও সারদার প্রায়ই অশান্তি হত। আর মেয়ের বিবাহ বহির্ভুত সেই সম্পর্কে মদত ছিল যুবকের শাশুড়ির। সারদা এবং বিকাশ একসঙ্গে রমেশকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। সেইমতো তিনজনকে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে ভাড়া করা হয়। টাকা হাতে পাওয়ার পর ভাড়াটে খুনিরা সারদা এবং বিকাশের পরিকল্পনাকে বাস্তব রূপ দেয়।
রমেশের ডাকনাম ছিল কালা জামুন। আলোচনা আছে বলে জামুনদাকে ডাকে বিকাশ। একসঙ্গে বসে মদ্যপান করে। তারপর চপার দিয়ে কুপিয়ে খুন করে। পুলিশ বিকাশ সহ তিন ভাড়াটে খুনি- পরীক্ষিত সোম ওরফে বাপি, অভিষেক রাজভর ওরফে আশিস, প্রসেনজিৎ বিশ্বাস ওরফে বাবুকে গ্রেপ্তার করে। রবিবার চারজনকেই চুঁচুড়া আদালতে পেশ করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
চন্দননগর পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক মেনে নিতে পারছিল না রমেশ। তাই স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি হত। সেই স্ত্রী তার প্রেমিকের সঙ্গে যুক্তি করে যুবককে খুনের পরিকল্পনা করে। তার জন্য টাকা দিয়ে খুনিদের ভাড়া করে।