নবদ্বীপ বহু যাত্রী প্রতীক্ষালয়েরই বেহাল দশা, ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন
বর্তমান | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: যাত্রী প্রতীক্ষালয় নামেই আছে। যাত্রীদের বাসের জন্য দাড়িয়ে থাকতে হয় প্রতীক্ষালয়ের বাইরে, খোলা আকাশের নিচে। নবদ্বীপের অনেক যাত্রী প্রতীক্ষালয়ই আর ব্যবহার করার মতো অবস্থায় নেই। কোন প্রতীক্ষালয় গোটাটাই জরাজীর্ণ,কোনটির বসার আসনগুলি ভেঙে পড়ে আছে, আবার কোনটি সাইকেল রাখার জায়গায় পরিণত হয়েছে। এমনকী প্রতীক্ষালয়ের ভেতরে জ্বালানি সহ আবর্জনা বোঝাই হয়ে পড়ে আছে। ঘটতে পারে বড়সড় অগ্নিকাণ্ড। সবমিলিয়ে রোদ-জল ঝড় বৃষ্টিতে ওই সব প্রতীক্ষালয়গুলি ব্যবহার করতে পারছেন না বৃদ্ধ, অশক্ত মানুষ থেকে শুরু করে স্কুল পড়ুয়ারা।
নবদ্বীপ গৌরাঙ্গ সেতু থেকে কৃষ্ণনগর রুটের ভালুকা বটতলা পর্যন্ত রাজ্য সড়কের পাশে যে চারটি যাত্রী প্রতীক্ষালয় রয়েছে, সেগুলি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে গৌরাঙ্গ সেতু সংলগ্ন মাজদিয়া-পানশিলা পঞ্চায়েতের ফরেস্টডাঙার মোড়, গৌরনগর মোড়, মুকুন্দপুর মোড়ের মুকুন্দপুর যাত্রী প্রতীক্ষালয় এবং ভালুকা বটতলার মোড়ে যাত্রী প্রতীক্ষালয়, প্রতিটিই চরম অব্যবস্থার মধ্যে পড়ে রয়েছে। ফলে প্রতিদিনই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে মাজদিয়া-পানশিলা, চরমাজদিয়া- চরব্রহ্মনগর, স্বরূপগঞ্জ এবং ভালুকা পঞ্চায়েতের কয়েক হাজার বাসিন্দাদের।
নবদ্বীপ গৌরাঙ্গ সেতু থেকে কৃষ্ণনগরে যাবার এই রাজ্য সড়ক দিয়ে প্রতিদিন নবদ্বীপ থেকে কৃষ্ণনগর আপ ডাউন এবং কৃষ্ণনগর-বর্ধমান সহ বিভিন্ন রুটের অসংখ্য বাস যাতায়াত করে। বিভিন্ন পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের এমনকী স্কুল পড়ুয়াদের যাতায়াত করতে হয় এই পথে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকার কারণে প্রতীক্ষালয়গুলিতে মদ্যপদের আনাগোনা হচ্ছে। এরফলে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে গোটা এলাকায়।
স্থানীয় বাসিন্দা,বাবলু প্রামাণিক বলেন, গৌরনগরের মোড়ে যাত্রীদের জন্য তৈরি হওয়া প্রতীক্ষালয়টি ২০০০ সালের বন্যার পর থেকে ভেঙে গিয়েছে। তখন থেকেই ওই অবস্থায় পড়ে আছে। বসার জায়গাগুলো সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়েছে। ভেতরে আবর্জনা ভর্তি। এমনকী প্রতীক্ষালয়টি সাইকেল গ্যারেজে রূপান্তরিত হয়েছে। অথচ এই বাস স্টপেজ থেকে নতুন আনন্দবাস, গৌরনগর, ঘোলা পাড়া, চরমাজদিয়া সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষ যাতায়াত করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা গৃহবধূ সুজাতা ঘোষ বলেন, আমার ছেলে সপ্তম শ্রেণিতে নবদ্বীপে হিন্দু স্কুলে পড়াশোনা করে। প্রতিদিন এখান থেকেই বাস ধরতে হয়। যখন গাড়ি আসতে দেরি করে বা বৃষ্টি নামে সেই সময় এই প্রতীক্ষালয়ে আশ্রয় নেওয়া যায় না।
মুকুন্দপুর বাসিন্দা তপন দাস বলেন, এখানকার প্রতীক্ষালয়ের ঘরটি যখন প্রথম করা হয়েছিল তখনই ঠিকমতো করা হয়নি। এখন তো আর ব্যবহারই করা যায় না। প্রতীক্ষালয়গুলো সারানোর বিষয়টি প্রশাসনের গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।
মাজদিয়া-পানশিলার পঞ্চায়েতের শিল্প পরিকাঠামো সঞ্চালক মিঠুন ঘোষ বলেন, দীর্ঘদিনের পুরনো এই প্রতীক্ষালয়গুলি। এখানে কেউ সব্জি রেখে দিচ্ছেন কেউবা বিচালি,পাটকাঠি রেখে নোংরা করছেন। যারা এভাবে নোংরা করে রাখছেন তাদেরকে সাবধান করে দেওয়া হবে। আগামীদিনে নতুনভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা করে মেরামতি করবে পঞ্চায়েত।