সংবাদদাতা, বোলপুর: রবিবার সন্ধ্যায় বৈতালিকের মাধ্যমে এ বছরের পৌষ উৎসব ও মেলার উদ্বোধন হল। আজ, সোমবার সকাল সাতটায় ছাতিমতলায় হবে ব্রহ্ম উপাসনা। মেলা উপলক্ষ্যে শান্তিনিকেতনকে কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলেছে বীরভূম জেলা পুলিস-প্রশাসন। দর্শনার্থী তথা স্থানীয়রা যাতে কোনওরকম সমস্যায় না পড়েন সেজন্য নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আড়াই হাজার বাহিনী নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়াও ওয়াচ টাওয়ার, সিসি ক্যামেরা, উইনার্স টিম রাখা হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণের বিভিন্ন জায়গায় করা হয়েছে পুলিস সহায়তা বুথ। মেলার মাঠে পুলিস কন্ট্রোল রুমও করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের জন্য এবারই প্রথম জেলা পুলিস বিশেষ কিউআর কোড চালু করেছে। সেটি খুললেই ব্যবহারকারীরা মেলা ঘোরার গাইড, মানচিত্র, পার্কিং সহ একাধিক সুবিধা পাবেন। রবিবার থেকেই মেলা প্রাঙ্গণে ভিড় জমিয়েছেন আউল-বাউল-ফকিরের দল। সব মিলিয়ে শান্তিনিকেতনে এখন জমজমাট পরিবেশ।
২০১৯ সালের পর পূর্বপল্লির মাঠে এবছর বিশ্বভারতী নিজে উদ্যোগে পৌষমেলার আয়োজন করেছে। সবরকম সহায়তা করছে জেলা প্রশাসন। পৌষমেলায় রাজ্যের পাশাপাশি দেশ-বিদেশের প্রায় লক্ষাধিক পর্যটকের সমাগম হয়। ভিড়ে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিস বিশেষভাবে তৎপর। মহকুমার এক আধিকারিক বলেন, ইতিমধ্যেই পুলিস, সিভিক, রিজার্ভ ফোর্স সব মিলিয়ে প্রায় আড়াই হাজার বাহিনীকে নিরাপত্তার জন্য রাখা হয়েছে। মেলার বিভিন্ন প্রান্তে লাগানো হয়েছে ৩০০টি সিসি ক্যামেরা। মেলা প্রাঙ্গণের পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকেই এই সমস্ত ক্যামেরায় নজরদারি চালানো হবে। দায়িত্বে থাকবেন ইন্সপেক্টর বা ডিএসপি পদমর্যাদার আধিকারিক। মেলায় আগত দর্শনার্থীদের সমস্যা দেখার জন্য বোলপুরের বিভিন্ন প্রান্তে করা হয়েছে পুলিসি সহায়তা কেন্দ্র। নজরদারিতে বসানো হয়েছে ১১টি ওয়াচ টাওয়ার। পাশাপাশি, কেউ সমস্যায় পড়লে দু’টি জরুরি হেল্পলাইনও (০৩৪৬৩-২৫২০০৭ এবং ০৩৪৭৩- ২৫২০০৮) চালু করা হয়েছে।
মেলায় এবারই প্রথম কিউআর কোড চালু করেছে জেলা পুলিস। মোবাইল ফোন থেকে এটি স্ক্যান করলেই অভিযোগ জানানো থেকে শুরু করে, গাইড ম্যাপ, জরুরি নম্বর, পার্কিং জোন প্রভৃতি দেখা ও সহায়তা পাওয়া যাবে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রবীণ ও বিশেষভাবে সক্ষমদের মেলা প্রাঙ্গণে বিনামূল্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য দশটি টোটো প্রস্তুত রেখেছে শান্তিনিকেতন থানা। প্রশাসনিক তৎপরতার পাশাপাশি কচিকাঁচাদের মনোরঞ্জনের জন্য মেলায় করা হয়েছে শিশু-বান্ধব স্টল। তবে, বিগত বছরগুলির মত এবারেও পরিবেশবিধি কঠোরভাবে মেনে মেলার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। কেউ যাতে নোংরা-আবর্জনা না ছড়ায় সেজন্য নিয়ম করে মেলা পরিদর্শন করবেন শান্তিনিকেতন কর্মী পরিষদ, পুরসভা ও প্রশাসনের আধিকারিকরা। জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ‘সুষ্ঠুভাবে মেলা আয়োজন করার জন্য বিশ্বভারতী ও প্রশাসন যৌথ উদ্যোগে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সেগুলি যাতে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সেদিকেই আমাদের লক্ষ্য থাকবে। শান্তি- শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সকলকেই দায়িত্ব নিতে হবে।’