সংবাদদাতা, কাটোয়া: সোমবার অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। তার আগে শনিবার রাতে কেতুগ্রামের কান্দরা কলেজের নবীনবরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চ আগুনে ভস্মীভূত হওয়ায় রহস্য দানা বেঁধেছে। দাউ দাউ করে আগুন লেগে যাওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। মঞ্চের কাপড় থেকে শামিয়ানা সবই পুড়ে গিয়েছে। পরে জল দিয়ে আগুন নেভানো হয়। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দলীয় কোন্দলের জেরেই আগুন লেগেছে বলে অভিযোগ তুলছে সিপিএম। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল। পুলিস তদন্ত শুরু করেছে। কান্দরা কলেজের অধ্যক্ষ মৃণালকান্তি চট্টোপাধ্যায় বলেন, আগুন লেগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চ পুড়ে গিয়েছে। কীভাবে আগুন লাগল তা আমার জানা নেই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কান্দরা কলেজে বার্ষিক অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। কলেজ চত্বরে প্যান্ডেল বাঁধার কাজও শেষ হয়ে গিয়েছে। সোমবার সেখানে অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। তার আগেই ওইদিন রাতে আগুন লাগে। মঞ্চ ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। কীভাবে আগুন লাগল তা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। তৃণমূলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা বলে সিপিএম নেতা মিজানুল কবীর ধীরাজ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে কান্দরা কলেজের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে তৈরি হওয়া প্যান্ডেল পুড়ে ছাই হয়ে যায়।’ মিজানুল বলেন, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। যে গোষ্ঠী এখন দলে পাত্তা পাচ্ছে না তারাই আক্রোশবশত আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতির জন্য এভাবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় আমরা ধিক্কার জানাই। ব্লক তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একাংশ জানিয়েছে, মঞ্চে আগুন লাগানো হয়েছে। কেতুগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি রবি মুন্সি বলেন, যারা একাজ করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা পুলিসকে জানিয়েছি। পুলিস পেট্রল ও ডিজেলের বোতল পড়ে থাকতে দেখেছে। কেউ চক্রান্ত করে আগুন লাগিয়েছে বলে আমাদের বিশ্বাস। কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ শাহনওয়াজ বলেন, কলেজে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। সিপিএম বাজে কথা বলছে। কলেজে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। ফুটেজ পরীক্ষা করে পুলিস তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর ধরে কলেজ নির্বাচন হয়নি। তাই ব্লক তৃণমূল ছাত্র পরিষদেরই একটি ইউনিট বরাবরই কান্দরা কলেজে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখাশোনা করত। গত কয়েক মাস ধরে সেখানে দুটি গোষ্ঠী তৈরি হয়। পুরনো আর নতুনদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। তা নিয়ে বিধায়কের কাছেও তারা দরবার করেছিল। সেসব গোলমালের জেরেই অগ্নিকাণ্ড কিনা তা দলীয়ভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।