• শিলিগুড়ি-আলিপুরদুয়ারের তুলনায় বিক্রি কম ময়নাগুড়ির জেলা বইমেলায়
    বর্তমান | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সোমনাথ চক্রবর্তী, ময়নাগুড়ি: লাভের মুখ দেখা হল না জলপাইগুড়ি জেলা বইমেলায়। রবিবার মেলায়  স্টলের প্রতিনিধিদের মধ্যে চলল এমনই চর্চা। শেষদিনেও বিকেল পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গণ ছিল কার্যত ফাঁকা। গত সাতদিন মেলা প্রাঙ্গণে ভিড়টা সন্ধ্যার পর হলেও তা স্টলের কেনাবেচা বাড়াতে পারেনি। শিলিগুড়ির বাঘা যতীন পার্কে মহকুমা বইমেলা, আলিপুরদুয়ার জেলা বইমেলায় ‘ভালো অভিজ্ঞতার’ পর ময়নাগুড়িতে কার্যত হতাশ দূর দূরান্ত থেকে আসা প্রকাশনী সংস্থাগুলি। যদিও মুখ রক্ষা করেছে গ্রন্থাগার এবং স্কুল। একাধিক ব্যবসায়ীর মন্তব্য, শিশু-কিশোররা দেদার বই কিনেছে বলে কিছুটা হলেও ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন তাঁরা। অনেকে আড়ালে বলছেন, বিক্রির নিরিখে কার্যত ‘ফ্লপ’ জলপাইগুড়ি জেলা বইমেলা।


    কথা হচ্ছিল কলকাতা থেকে আসা ব্যবসায়ী চন্দ্রমণি মজুমদারের সঙ্গে। পাঠক নেই বলে স্টলে বসে রোদ পোহাতে পোহাতেই তাঁর গলায় আক্ষেপ, এই জেলার মানুষ বই পড়তে বেশি ভালোবাসেন জেনে আমরা প্রচুর বই এনেছিলাম। কিন্তু ফিরতে হচ্ছে সেভাবেই। এর আগে শিলিগুড়িতে এবং আলিপুরদুয়ারে আমরা স্টল দিয়েছিলাম। সেখানে বিক্রি ভালো হয়েছে। কিন্তু ময়নাগুড়ি আমদের হতাশ করল। প্রতিদিন মঞ্চে বিকট শব্দে অনুষ্ঠানের জন্য পাঠকরাও বিরক্তি প্রকাশ করে গিয়েছেন। আরএকটি প্রকাশনা সংস্থার স্টলের প্রতিনিধি দীপঙ্কর সর্দার বলেন, আমার ১০০ স্কোয়ারফুটের স্টল নিয়েছি। যার জন্য পাঁচ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হয়েছে। একটি টেবিল বেশি নিলে ভাড়া দিতে হয়েছে। কিন্তু বিক্রি ভালো হয়নি। গ্রন্থাগারগুলি বই কিনেছে বলে কিছুটা মুখরক্ষা হল। এই সাতদিনে মাত্র ২৫ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। নিজের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে আরএকটি স্টলের প্রতিনিধি অনিমা সাহা বলেন, কয়েক বছর আগেও ময়নাগুড়ি বইমেলায় এসেছিলাম। সেই সময়ের থেকে এবার মেলার মাঠে লোক বেশি হয়েছে। কিন্তু স্টলে বিক্রিবাট্টা হয়নি। সন্দীপ সরকার এবং ইউসুফ মণ্ডল নামে অন্য প্রকাশনা সংস্থার প্রতিনিধিদের মুখেও একই কথা।  


    এ ব্যাপারে জেলা বইমেলা কমিটির সাংস্কৃতিক উপ সমিতির কনভেনার দীপক চক্রবর্তী বলেন, মেলা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠানে সাউন্ড নিয়ে একটা সমস্যা হয়েছিল। ব্যবসায়ীরা সেটা আমাদের জানিয়েছিলেন। তবে বই বিক্রি ভালো হয়নি, এ কথাটা ঠিক নয়। ভালো পরিমানে বই বিক্রি হয়েছে বলেই আমরা জানি। সুষ্ঠুভাবেই মেলা সম্পন্ন হয়েছে।


    দীর্ঘ কয়েক বছর ময়নাগুড়িতে ফিরেছিল জলপাইগুড়ি জেলা বইমেলা। গত সোমবার থেকে শুরু হয়ে এদিন যবনিকা পতন হল। নিরাশা ঝেড়েই কোচবিহার বইমেলার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন ব্যবসায়ীরা।


    (রবিবার দুপুরেও ফাঁকা বইমেলা প্রাঙ্গণ। - নিজস্ব চিত্র।)
  • Link to this news (বর্তমান)