• বামেদের ‘লবি’র লড়াইয়ে কমিটি থেকে নাম প্রত্যাহার ১৮ জনের, বাক্সে ভোট না থাকলেও কাজিয়া বহাল
    বর্তমান | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ভোটব্যাঙ্ক আগেই ধসে গিয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনে জেলার অসংখ্য বুথে পোলিং এজেন্ট পর্যন্ত দিতে পারেনি সিপিএম। কিন্তু সিপিএম সেসব নিয়ে চিন্তিত নয়! তারা এখনও লবিবাজি, কমিটি, দলের অন্দরে তরুণদের দমিয়ে রাখার চর্চাতেই ব্যস্ত। এসব যে নিছক নিন্দুকের সমালোচনা নয়, সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্মেলনে কার্যত তারই প্রমাণ রাখল। বিদায়ী জেলা সম্পাদক জেলা কমিটির সদস্য হিসেবে ৬৫ জনের নাম প্রস্তাব করলেন। তাঁদের মধ্যে ১৮ জন প্রস্তাবিত কমিটি থেকে নিজেদের সরিয়ে নিলেন। সিপিএমের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা নিঃসন্দেহে নজিরবিহীন। নিয়ম অনুযায়ী, সর্বসম্মতিতে কমিটি গঠন করা না গেলে পাল্টা প্যানেল জমা পড়ে। তারপর ভোটাভুটিতে কমিটি চূড়ান্ত হয়। এখানে কোনও ভোটাভুটি না হলেও এতজন কেন সরিয়ে নিলেন নিজেদের? সূত্রের খবর, চারজন ‘জনপ্রিয়’ পার্টি সদস্যকে কমিটিতে না রাখা নিয়ে অসন্তোষের সূত্রপাত। দলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশের বক্তব্য, এই কাণ্ডের পিছনে রয়েছে দলের দুই শীর্ষস্তরের নেতা সুজন চক্রবর্তী ও শমীক লাহিড়ীর লবির লড়াই। যদিও সুজনবাবু এই তত্ত্ব পুরপিুরি নস্যাত্ করে দিয়েছেন।


    দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সিপিএমের সংগঠন তলানিতে অনেকদিন থেকেই। গত লোকসভা ভোটে মথুরাপুর ও জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রে বামেরা চতুর্থ হয়েছে। জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে যাদবপুর, ডায়মন্ডহারবার, মথুরাপুর ও জয়নগরে। এমনকী, যাদবপুরে ২১২০টি বুথের মধ্যে ১২৭টিতে পোলিং এজেন্ট ছিলেন না। জয়নগরের হিসেবই পায়নি জেলা পার্টি। এই অবস্থায় বিষ্ণুপুরের আমতলায় জেলা সম্মেলন শুরু হয় শুক্রবার। শনিবার জেলা সম্পাদক রতন বাগচী ৬৫ জনের নাম প্রস্তাব করেন। তারপরই ১৮ জন নাম প্রত্যাহার করে নেন। এঁদের মধ্যে ১২ জনই পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী বলে জানা গিয়েছে। প্রত্যাহারের তালিকায় রয়েছেন রাজ্য কমিটির সদস্য রাহুল ঘোষ, সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রী মিলি চক্রবর্তী। তিনজন জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যও নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। সূত্রের খবর, এঁদের মধ্যে সুজন-ঘনিষ্ঠ বলে পরচিত এক তরুণ নেতা নাম প্রত্যাহার করেননি। 


    এসব কাণ্ডকে কেন্দ্র করে সম্মেলনে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ৮৭ জন প্যানেলের বিরোধিতা করেন। সিদ্ধান্ত নেওয়া নয়, নতুন কমিটি পরবর্তী সময়ে শূন্যপদগুলি পূরণের বিষয়টি ঠিক করে নেবে। দলের কর্মীদের একাংশ বলছে, নয়া কমিটিতে যাদবপুর, জয়নগর, কুলতলি. মন্দিরবাজার থেকে প্রায় কেউই রইলেন না। তাহলে কি সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা বারুইপুর কেন্দ্রিক হয়ে গেল? এসবের মধ্যেই রবিবার প্রকাশ্য সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয় সম্মেলন।
  • Link to this news (বর্তমান)