• স্বামীকে খুনের জন্য ৭০ হাজারের সুপারি প্রেমিককে দিয়েই টাকা পাঠিয়েছিল স্ত্রী
    বর্তমান | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: স্বামীকে খুন করতে ৭০ হাজার টাকার সুপারি দিয়েছিল স্ত্রী। প্রেমিক মারফত সেই টাকা পাঠানো হয়েছিল দুষ্কৃতীদের। মদের আসরে স্বামীকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল স্ত্রীর প্রেমিকই। সেখানেই বসে ছিল তিন সুপারি কিলার। ব্যান্ডেলে রমেশ মুদালিয়া খুনের তদন্তে নেমে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেয়েছে পুলিস। পাশাপাশি, শনিবার গভীর রাতে মৃতের স্ত্রী ভারতী মুদালিয়ার প্রেমিক বিকাশ মাহালি ও তিন পেশাদার অপরাধীকে পুলিস গ্রেপ্তার করেছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বিকাশের কাছ থেকেই সুপারির টাকা নিয়েছিল ত্রিবেণীর বাসিন্দা প্রসেনজিৎ বিশ্বাস। সে জোগাড় করেছিল আরও দুই দুষ্কৃতী অভিষেক রাজভড় ও পরীক্ষিত সোমকে। ধৃত চারজনকেই এদিন আদালতে হাজির করে হেফাজতে নিয়েছে চুঁচুড়া থানার পুলিস।


    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, চারজনের বিরুদ্ধেই একাধিক অপরাধের পুরনো অভিযোগ রয়েছে। ধৃতদের মধ্যে তিনজনের বয়স ২২ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে। কেবল পরীক্ষিতের বয়স ২৭ বছর। প্রসেনজিৎ বাদে তিনজনই চুঁচুড়া থানা এলাকার বাসিন্দা। তবে সে চুঁচুড়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকত। প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকালে ব্যান্ডেলের কানাগড়ের টাওয়ার কলোনির একটি পরিত্যক্ত স্থানে রমেশ মুদালিয়াকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর বুক থেকে পেট পর্যন্ত চেরা ছিল। গলায় ছিল ধারালো অস্ত্রের দাগ। তদন্তে নেমে পুলিস মৃতের স্ত্রী ভারতীর পরকীয়ার সম্পর্কের হদিশ পায়। শুক্রবারই ভারতী ও তার মা ইন্দ্রাস্বামীকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। শনিবার গভীর রাতে ভারতীর প্রেমিক তথা ব্যান্ডেলের বাসিন্দা বাইশ বছরের যুবক বিকাশ মাহালিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই যাবতীয় ষড়যন্ত্র প্রকাশ্যে আসে। তারপর রাতেই অভিযান চালিয়ে তিন সুপারি কিলারকে পুলিস গ্রেপ্তার করে। 


    চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিস জানিয়েছে, নির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে বিকাশ মাহালি সহ চার যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের অপরাধমূলক কাজের অতীত আছে। খুনের ঘটনায় দুই মহিলা সহ চার যুবকের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে। রবিবার মৃতের সৎ মা নাগরানি মুদালিয়া বলেন, আমি আগেই বলেছিলাম ভারতী, তার প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে পথের কাঁটা সরিয়েছে। ওরাই আমার ছেলেকে খুন করেছে। আমি খুনিদের যোগ্য শাস্তি চাই।


    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বিকাশের সঙ্গে স্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ থাকলেও রমেশ তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখত। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি থেকে বেরলেও ফিরে এসেছিল রমেশ। রাতে টাওয়ার বাগানের পরিত্যক্ত জায়গায় বিকাশ, সুপারি কিলারদের নিয়ে মদের আসর বসায়। পরে সে রমেশকে ডেকে নিয়ে যায়। তখন বাড়িতে রমেশের স্ত্রী ও শাশুড়ি উপস্থিত ছিল। তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, ভারতী রমেশকে একরকম জোর করে মদের আসরে পাঠায়। সেখানেই মদ্যপ অবস্থায় থাকা রমেশকে খুন করে সুপারি কিলাররা। এক তদন্তকারী বলেন, গোটা ঘটনায় ভারতীর প্রত্যক্ষ মদত ছিল এবং তার মা ষড়যন্ত্রের অংশীদার ছিল।
  • Link to this news (বর্তমান)