এই সময়, মেদিনীপুর: সরকারি উদ্যোগে মেদিনীপুরে তৈরি হচ্ছে ছেলেদের হোম। যেখানে থাকতে পারবে ১০০ জন শিশু-কিশোর। ছয় থেকে আঠেরো বছরের ছেলেদের জন্য এই হোমে থাকছে তিন ধরনের কনসেপ্ট। ‘প্লেস অফ সেফটি’ কনসেপ্টে থাকবে ২৫ জন শিশু-কিশোর। ‘অবজ়ারবেশন’ কনসেপ্টে থাকবে ২৫ জন, আর ‘চিলড্রেন্স হোম’ কনসেপ্টে থাকতে পারবে ৫০ জন শিশু-কিশোর। প্রশাসনিক স্তরে চলছে চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতি।
ইতিমধ্যে জায়গাও চিহ্নিত করার কাজ শেষ হয়েছে। প্রস্তাবও চলে গিয়েছে রাজ্যের কাছে। মেদিনীপুর শহরের তাঁতিগেড়িয়া এলাকায় একটি সরকারি বিল্ডিংয়ে গড়া হবে এই বিশেষ ব্যবস্থা। করোনার সময়ে এখানেই তৈরি হয়েছিল কোয়ারান্টিন সেন্টার। অতীতে ছিল পাগলা গারদের অধীন ‘ট্রেনিং’ কাম ‘প্রোডাকশন সেন্টার’।
করোনার সময়ে এই বিল্ডিংটি ছিল শিশু সুরক্ষা দপ্তরের অধীনে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, তখন থেকেই ভাবনা ছিল এই বিল্ডিংকে কাজে লাগিয়ে ছেলেদের একটি হোম তৈরি করার। অবশেষে যা বাস্তবায়িত হতে চলেছে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে। প্রাথমিক স্তরে শুরু হয়েছে বিল্ডিং সংস্কারের কাজ। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, হোম তৈরির গ্রিন সিগন্যালও মিলেছে রাজ্যের তরফে। চালু হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা।
আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই চালু হবে বলে ধারণা আধিকারিকদের। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘হোমের কাজ বেশ কিছুটা এগিয়েছে। চালু হওয়ার আগে বিল্ডিং সংস্কার-সহ অন্যান্য কিছু কাজ বাকি। আশা করি আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে নতুন হোম চালু হবে।’
পশ্চিম মেদিনীপুরে জেলার কেন্দ্র মেদিনীপুর শহরের উপকন্ঠে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় ‘বিদ্যাসাগর বালিকা ভবন’ নামে মেয়েদের একটি হোম রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ‘শা’ হোমও। জেলায় ছেলেদের জন্য চারটি বেসরকারি কটেজ হোম থাকলেও, কোনও সরকারি হোম নেই।
সূত্রের খবর, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকা থেকে নানা কারণে উদ্ধার হওয়া ছেলেদের রাখতে হয় এই কটেজ হোমে। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা একাধিক বার রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ করার ফলে অনুমোদনও মিলেছে হোম তৈরির। চালু করার যাবতীয় প্রক্রিয়া চলছে। সমস্ত কাজ শেষ হলেই চালু হবে নতুন হোম।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘এটা আমাদের জেলার একটা বিরাট পাওনা। যা পরিকল্পনা রয়েছে তাতে রাজ্যের মধ্যে একটা ইউনিক হোম গড়ে উঠবে।’ উল্লেখ্য, মেদিনীপুরের ‘বিদ্যাসাগর বালিকা ভবন’ হোমের পারফরম্যান্স খুবই ভালো। মেদিনীপুর ‘শা’ হোম থেকে ৬৭ জন শিশুকে দত্তক দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৩ জন শিশু পাড়ি দিয়েছে বিদেশে। ছেলেদের হোম তৈরি হওয়ার পরও ভালো পারফরম্যান্স করবে বলেই আশা সকলের।