এই সময়: আকাশ পরিষ্কার হতেই রাতের তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে দক্ষিণবঙ্গে। তবে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যে জায়গায় থাকলে শীতপ্রেমী বাঙালি ঠান্ডার আমেজটা তারিয়ে উপভোগ করতে পারতেন, রবিবার অন্তত সেই পরিস্থিতি একেবারেই ছিল না।
মেঘের আস্তরণ সরে বৃষ্টি পুরোপুরি থেমে গিয়েছে ঠিকই, কিন্তু দক্ষিণবঙ্গের বায়ুমণ্ডলে এখনও বিপুল পরিমাণে জলীয় বাষ্প রয়ে গিয়েছে বলে জানাচ্ছে আলিপুর হাওয়া অফিস। তার প্রভাবেই বড়দিনের তিন দিন আগেও শহরে শীত গায়েব। সামনের তিন দিনে এই অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন হবে বলে আশা করছেন না আবহবিদরা।
তাঁরা বলছেন, সমুদ্র শান্ত হয়ে দেশের দক্ষিণ–পূর্ব দিকের ‘দরজা’–টা খুলে গিয়ে উত্তর–পশ্চিম দিক থেকে আসা বাতাসের পথ সুগম হয়েছে। তবে পশ্চিমি ঝঞ্ঝার প্রভাবে আপাতত বন্ধ উত্তর–পশ্চিমের ‘জানলা’।
রবিবার সকালে মৌসম ভবন যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, সেই রিপোর্ট অনুযায়ী আফগানিস্তানের উপর একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। ওই ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবেই উত্তর–পশ্চিম ভারতে তৈরি হয়েছে একটি পশ্চিমি ঝঞ্ঝা। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, হিমাচলপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের বেশ কয়েকটি জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি শুরু হওয়ায় ওই অঞ্চলেও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি বেড়ে গিয়েছে।
বাংলার, বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের অবস্থা সম্পর্কে বলতে গিয়ে আবহবিদরা জানাচ্ছেন, রবিবার ভোররাতে একমাত্র দার্জিলিং (৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ছাড়া কোনও জায়গারই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সিঙ্গল ডিজিটে ছিল না। এতদিন ধরে যে পুরুলিয়া ‘ঠান্ডা যুদ্ধে’ দার্জিলিংকে পর্যন্ত চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছিল, সেই পুরুলিয়া (১২.১ ডিগ্রি) পর্যন্ত শীতলতায় আলিপুরদুয়ার (১০ ডিগ্রি), কোচবিহার (১০.৫ ডিগ্রি) তো বটেই, এমনকী রায়গঞ্জ (১১.৪ ডিগ্রি) ও শিলিগুড়ির (১১.৮ ডিগ্রি) চেয়েও ‘উষ্ণ’।
আগামী কয়েক দিনের আবহাওয়ার পরিস্থিতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ রবীন্দ্র গোয়েঙ্কা বলেন, ‘সপ্তাহের শেষ দিকে আবার ঠান্ডা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইংরেজি নতুন বছরের আগে সেই অর্থে ‘জাঁকিয়ে ঠান্ডার’ আশা কম। মাঝের সময়টা শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫–১৭ ডিগ্রি এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৪–২৬ ডিগ্রির মধ্যে থাকার সম্ভাবনা খুব বেশি।’