এই সময়, ক্রান্তি: প্রায় এক মাস বিনা চিকিৎসায় জখম অবস্থায় থাকার পর জীবনযুদ্ধে হার মানল বৈকুন্ঠপুর বনবিভাগের আপালচাঁদ রেঞ্জের হাতিটি। রবিবার সকালে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বৈকুন্ঠপুর বনবিভাগের ডিএফও রাজ এম। দেহে ক্ষত থাকার দরুণ হাতিটির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি৷ হাতিটির মৃত্যুর খবর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরিবেশপ্রেমীরা।
গত ২৪ নভেম্বর ক্রান্তি ব্লকের আপালচাঁদ রেঞ্জের বনাঞ্চলের কাছে নদীর মাঝে একটি পূর্ণবয়স্ক মাকনা হাতিকে শুয়ে থাকতে দেখেন গ্রামবাসীরা। বুনোটির শরীরের পেছনের অংশে একাধিক ক্ষত দেখতে পান তাঁরা। আরেকটি দাঁতালের সঙ্গে লড়াইয়ের জেরে হাতিটির শরীরে ক্ষত তৈরি হয়েছিল বলে অনুমান। বন দপ্তরে খবর গেলে বনকর্মীরা এসে হাতিটিকে পটাকা ফাটিয়ে জঙ্গলের ভেতরে নিয়ে যান।
পশু চিকিৎসকরা হাতিটির জন্য ওরাল ট্রিটমেন্ট শুরু করেন। তবে হাতিটির সম্পূর্ণ চিকিৎসার জন্য ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে চিকিৎসা করার কথা উঠলেও তা আর করা হয়নি। এভাবেই কেটে যায় প্রায় এক মাস। কখনও গ্রামের মাঝে আবার কখনও নদীর মাঝে দিনভর শুয়ে থাকতে দেখা যেত বুনোটিকে।
ক্ষতস্থানে কখনও শুঁড় দিয়ে মাটি ছুড়ে, কখনও জল ছিটিয়ে যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতে চেষ্টা করত হাতিটি। যে দৃশ্য দেখে অনেক গ্রামবাসীরই চোখ ভিজে উঠেছিল। গত শনিবার হাতিটিকে আপালচাঁদ রেঞ্জের টুকরো জঙ্গল থেকে ক্রান্তি–শিলিগুড়িগামী ক্যানেল রাস্তা পার করিয়ে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যান বনকর্মীরা। ক্ষত নিয়ে অতটা রাস্তা পেরিয়ে আরও কাবু হয়ে পড়ে হাতিটি। একদিন পরই জঙ্গলের ভেতরে বুনোটির দেহ মিলল।
হাতিটির মৃত্যু নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে বিভিন্ন মহলে। ডুয়ার্সের পরিবেশপ্রেমী অনির্বাণ মজুমদার, মানবেন্দ্র দে সরকাররা বলেন, হাতির মৃত্যুতে চরম গাফিলতি রয়েছে বন দপ্তরের। এক মাস ধরে হাতিটি জখম অবস্থায় গ্রামের কাছে ঘুর বেড়ালেও বন দপ্তর কোনও চিকিৎসা করেনি। হাতিটিকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।’