সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভের নিয়ম অজানা, জঙ্গল না ঘুরেই ফিরতে হচ্ছে বহু পর্যটককে
বর্তমান | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: কল্যাণী থেকে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে সোনাখালি ঘাটে এসেছিলেন রমাকান্ত বণিক নামে এক পর্যটক। ইচ্ছে ছিল, দিনভর লঞ্চে জঙ্গল, নদী, খাঁড়ি ইত্যাদি ঘুরে দেখবেন। কিন্তু সরকারি নিয়ম সঠিকভাবে জানা না থাকায় তাঁদের আশাপূরণ হয়নি। হতাশ হয়েই ফিরতে হয়। সোনারপুর থেকে ১০ জনের একটি দল নিয়ে গোসাবার গদখালি গিয়েছিলেন সৌমিত্র কর নামে এক ব্যক্তি। তাঁরাও নিয়ম না জানায় পরিকল্পনামাফিক সুন্দরবন ঘুরে দেখতে পারলেন না। নদীতে খানিক ঘুরেই ফিরে আসতে হল। যে নিয়মে আটকে পড়ছেন পর্যটকরা, সে নিয়মটি কী?
জানা গিয়েছে, প্রতিদিন ১২০টি বোট (নৌকা) সুন্দরবনের জঙ্গলে ভ্রমণ করতে পারবে। এই অনুমতি দেয় সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ। এই নিয়ম অনেকেরই জানা নেই। তাই আগাম বুকিং না করে যাঁরা আসছেন রমাকান্তবাবু বা সৌমিত্রবাবুর মত, তাঁরা ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প জানিয়েছে, নিয়মের বাইরে গিয়ে বাড়তি সংখ্যক বোটের অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়।
জানা গিয়েছে, বছরের শেষ সপ্তাহে বোটের বুকিং সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। ফলে নতুন করে আর অনুমতি মিলবে না। যাঁরা বুকিং ছাড়া আসবেন, তাঁদের সুন্দরবন ঘুরে দেখা হবে না। তবে বোট ও লঞ্চ সংগঠন টাইগার রিজার্ভ কর্তৃপক্ষের কাছে দৈনিক বোটের অনুমতির সংখ্যা বাড়ানোর আবেদন করেছে। গদখালি বা সোনাখালি ঘাটে এখন সকাল থেকেই পর্যটকদের ভিড়। এক শ্রেণির পর্যটকের মুখে হাসি। কারণ অনুমতি থাকার সুবাদে তাঁরা রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণ, কুমির ইত্যাদি দেখতে দেখতে ঘুরছেন। আর যাঁরা অনুমতি নেননি, তাঁদের ফিরতে হচ্ছে মুখ শুকনো করে। বোট মালিকদের হাজার অনুরোধ করেও কোনও লাভ হচ্ছে না। অনেকের প্রশ্ন, বোটের সংখ্যা বৃদ্ধি করা কেন যাচ্ছে না?
সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন এর উত্তরে বলেন, ‘ব্যাঘ্র সংরক্ষণ পরিকল্পনা অনুযায়ী অতিরিক্ত নৌকা বা লঞ্চকে একদিনে জঙ্গলে ঢোকার অনুমতি দেওয়ার সংস্থান নেই। সে কারণেই সীমিত সংখ্যক বোট যাতায়াত করার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।’ নিজস্ব চিত্র