• কবে সংস্কার করে ফের চালু হবে ময়নাগুড়ির পুরোনো জরদা সেতু
    এই সময় | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • অর্ঘ্য বিশ্বাস, ময়নাগুড়ি

    দু’বছর ধরে বন্ধ ময়নাগুড়ি শহরের লাইফ লাইন বলে পরিচিত পুরোনো জরদা সেতু। বড়–ছোট গাড়ি, অটো যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা থাকায় শহরের যানজট নিত্যদিনের ঘটনা। ইংরেজ আমলে তৈরি এই সেতুর চাপ কমাতে পাশেই ১৯৯৭ সালে নতুন জরদা সেতুটি তৈরি করা হয়। পুরোনো সেতু দিয়ে ময়নাগুড়ি পুরাতন বাজার থেকে নতুন বাজারের দিকে এবং নতুন সেতু দিয়ে নতুন বাজার থেকে পুরাতন বাজারের দিকে চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়।

    কিন্তু পুরোনো সেতুটি বন্ধ থাকায় নতুন সেতু দিয়েই যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। ফলে ময়নাগুড়ি থেকে ধূপগুড়ির দিকে যাওয়ার সময়ে যানজটে নাজেহাল অবস্থা শহরের বাসিন্দাদের। পুরোনো সেতু মেরামতের ক্ষেত্রে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ কেন উদাসীন, প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।

    সেতুটি মেরামতির জন্য ময়নাগুড়ি পুরসভার পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে একাধিক বার। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান মনোজ রায় বলেন, ‘পুরোনো সেতুটি বন্ধের ফলে ময়নাগুড়িবাসীর ভোগান্তি বাড়ছে। এর প্রভাব পড়ছে ব্যবসায়। একাধিক বার এই বিষয়ে এনএইচ–৯ কর্তৃপক্ষকে জানালেও তাদের ঢিলেমিতে অধরা সেতু সংস্কারের কাজ।’

    জানা গিয়েছে, ইংরেজ আমলে শিলিগুড়ির সেবকের করোনেশন ব্রিজের আদলে তৈরি করা হয়েছিল জরদা সেতু। কয়েক বছর আগে জলের স্রোতে সেতুটির পিলারের মাটি ধসে যাওয়ায় গোড়ায় বড় গর্ত হয়ে যায়। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ময়নাগুড়ি ব্লক প্রশাসনের তরফে পূর্ত দপ্তরকে জানানো হয়। তারা সেই সমস্যার কথা এনএইচ কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা ইঞ্জিনিয়ার পাঠিয়ে সেতুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে। পরিদর্শনে পরে পুরোনো জরদা সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। দু’বছর কাটলেও কেন সেতু সংস্কারে হাত লাগানো হয়নি, সদুত্তর মেলেনি।

    ময়নাগুড়ি এনএইচ (নাইন)–এর এগজি়কিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেবব্রত ঠাকুর বলেন, ‘সেতুটি নতুন ভাবে তৈরির জন্য কিছুটা সময় লাগবে। ডিপিআর তৈরি হয়ে গেলেই দ্রুততার সঙ্গে কাজ আরম্ভ করা হবে।’ প্রজেক্ট রিপোর্ট এখনও তৈরি না হওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে। ময়নাগুড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুমিত সাহার বক্তব্য, ‘সেতুটি ময়নাগুড়ির প্রাণ ছিল। কবে নতুন রূপ পাবে সেইদিকেই আমরা তাকিয়ে আছি। একটি সেতু দিয়ে গাড়ি যাতায়াত করায় তার ফল ভুগতে হচ্ছে আমাদের। অনেকে আমাদের বাজারে আসতে চাইছেন না। অন্য জায়গায় গিয়ে বাজার করছেন। এর ফলে ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে।’

    তিনি বলেন, ‘পুরোনো সেতু দিয়ে আগে একমুখী যান চলাচল করত। সেটি বন্ধ হওয়ায় পাশের নতুন সেতু দিয়ে আপ–ডাউনে গাড়ি চলাচলের ফলে যানজটের জেরে দুর্ভোগ বাড়ছে। অফিসের সময়ে ও সন্ধ্যার পরে এক–দু’ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকাটা এখন নিত্যদিনের ঘটনা। যানজট এড়াতে হিমশিম দশা পুলিশের।’ ময়নাগুড়ির বাসিন্দা সুদেব দত্ত বলেন, ‘পুরোনো জরদা সেতুটি ময়নাগুড়ির হেরিটেজ়। সংস্কার করা শীঘ্রই প্রয়োজন। দিনের পাশাপাশি রাতে যানজট সমস্যা বড় আকার ধারন করছে। বিশেষ করে ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে যাওয়ার জন্য যানজটের শিকার হচ্ছেন রোগীর আত্মীয়রা। মাঝে মধ্যেই সেতুর মাঝে থমকে যাচ্ছে যান চলাচল।’

    ময়নাগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান অনন্তদেব অধিকারী জানিয়েছেন, পুরসভার তরফে এনএইচ কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে অনেক দিন আগেই। দ্রুত যাতে পুরোনো সেতুটির কাজ শুরু করা যায় ফের চিঠি পাঠানো হবে।

  • Link to this news (এই সময়)