• ইংলিশ অনার্স নিয়ে পড়া প্রণবের শিকার কি পিসিও? কোচবিহারে জোড়া হত্যাকাণ্ডে বাড়ছে রহস্য
    এই সময় | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • জিওফ্রে চসার, পিবি শেলিতে মগ্ন থাকত ছেলেটা। ইংরেজি অনার্স নিয়ে ভর্তিও হয়েছিল। কিন্তু সাহিত্য থেকে মন সরিয়েছিল গাঁজা। আর সেই নেশাই ডেকে আনল সর্বনাশ? পাড়ার মেধাবী ছেলে বাবা এবং পিসতুতো দাদার খুনে অভিযুক্ত, মানতেই পারছেন না কোচবিহারের ডাউয়াগুড়ি গ্রামের বাসিন্দারা।

    সোমবার সকালে বৈশ্যপাড়ায় একটি বাড়ি থেকে বাবুল চন্দ্র বৈশ্য (৬০) এবং গোপাল রায় (৪০)-এর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বাবুলের ছেলে প্রণবই এই দু'জনকে খুন করেছে বলে প্রাথমিক সন্দেহ পুলিশের। এলাকাবাসীর দাবি, গোপালের মা তিন মাস আগে মাত্র ১ দিনের জ্বরে মারা গিয়েছিলেন। সেই সময় যে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়নি তা নয়। বাবুল এবং গোপালের মৃত্যুর পর তাঁদের সন্দেহ, ‘তবে কি সেই মৃত্যুর নেপথ্যেও…’। পুলিশ জানাচ্ছে, এই জোড়া মৃত্যুর ঘটনায় সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হবে। অতীতেও প্রণব কোনও কুকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

    কিন্তু বছর ৩০-এর প্রণব এই ধরনের কোনও ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে, তা ভাবতেও পারছেন না এলাকাবাসী। তাঁদের কথায়, ‘প্রণব বদমেজাজি হয়ে উঠেছিল। বাবাকে মাঝে মধ্যে মারধর করত। কিন্তু পাঁচ বছর আগেও ও একেবারে অন্য মানুষ ছিল। ইংরেজি অনার্স নিয়ে ভর্তিও হয়েছিল কলেজে। তবে পড়াশোনা শেষ করতে পারেনি। তার আগেই নেশায় ডুবে গিয়েছিল সে। গাঁজাই ওকে শেষ করে দিল।’

    স্থানীয়দের দাবি, বাড়ির সামনে গাঁজা চাষ করেছিল প্রণব। তাঁদের আর্থিক অবস্থাও স্বচ্ছল। জমি রয়েছে বিস্তর। একটি পুকুরও রয়েছে বাড়ির সামনে। সবমিলিয়ে ছোট সংসার চলে যেত ভালোভাবেই। কিন্তু প্রণবের গাঁজার আসক্তিই সব নষ্টের মূলে, দাবি স্থানীয়দের।

    এলাকাবাসীর কথায়, প্রণবের পিসির মৃত্যু নিয়েও তাঁদের মনে সন্দেহ ছিল। কারণ, তিনি শক্ত সমর্থই ছিলেন। মাত্র ১ দিনের জ্বরে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন প্রণব। মায়ের মৃত্যুর পর প্রণবের পিসতুতো দাদা তাঁদের বাড়িতেই খাওয়াদাওয়া করতেন। কয়েকদিন আগে সেই দাদা গোপাল গায়েব হয়ে যায় রহস্যজনকভাবে। সেই সময় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিল প্রণবই।

    গোটা ঘটনায় শিউরে উঠছেন গ্রামবাসীরা। জেলা পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, দুটি দেহ উদ্ধার হয়েছে। ফরেন্সিক রিপোর্ট খতিয়ে দেখা হবে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

    (তথ্য সহায়তা চাঁদ কুমার বড়াল)

  • Link to this news (এই সময়)