২০২১ সালের নভেম্বরের ঘটনা। নিপাট ভদ্রলোক বলেই এলাকায় পরিচিত গৃহশিক্ষকের নাম জড়ায় মা-বাবা-বোনকে খুনের ঘটনায়। হুগলির দশঘরার এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড রাজ্যজুড়ে শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। চার বছরের মাথায় সেই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত প্রমথেশ ঘোষালকে দোষী সাব্যস্ত করল চুঁচুড়া আদালত। বাবা, মা, বোনকে হাতের শিরা, গলার নলি কেটে নৃশংস ভাবে খুনের ঘটনায় প্রমথেশকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিল চুঁচুড়া আদালত।
সোমবার চুঁচুড়া আদালতের বিচারক সঞ্জয়কুমার শর্মা এই সাজা ঘোষণা করেন। সেই সময় আদালতকক্ষে উপস্থিত ছিল প্রমথেশ। সাজা শুনে ভেঙে পড়ে সে। মুক্তির আবেদন জানায়। যদিও সেই আবেদনে লাভ হয়নি।
২০২১ সালের ৮ নভেম্বর। হুগলির ধনেখালি থানার দশঘরা গ্রামের পালপাড়ার অসীম ঘোষাল (৬৮), শুভ্রা ঘোষাল (৬০) ও পল্লবী চট্টোপাধ্যায় (৩৮)-এর গলার নলি ও হাতের শিরা কেটে খুন করা হয়। মা, বাবা, বোনকে খুনের পরে প্রমথেশ নিজের হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
প্রমথেশকে উদ্ধার করে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্য দিকে পল্লবীর স্বামী পার্থ চট্টোপাধ্যায় শ্যালকের বিরুদ্ধে ধনেখালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। প্রমথেশ কিছুটা সুস্থ হতেই তাকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।
এলাকার ভালো শিক্ষক হিসাবেই পরিচিতি ছিল প্রমথেশের। দশঘরা হাইস্কুল থেকে পাশ করে বিজ্ঞানে স্নাতক করে কলকাতায় পড়তে যান। চাকরি না পাওয়ায় শুরু করে প্রাইভেট টিউশন পড়ানো। আয়ও খুব একটা খারাপ ছিল না। তবে লিভারের একটা সমস্যা তাকে ভোগাচ্ছিল বলে তদন্তে জানতে পারে পুলিশ। তা থেকেই অবসাদ ও এই ভয়াবহ ঘটনা বলে জানতে পারে পুলিশ।
সরকারি আইনজীবী শঙ্কর গঙ্গোপাধ্যায় জানান, মামলা চলাকালীন অভিযুক্ত জেলেই ছিল। এই মামলায় মোট ১৪ জন সাক্ষী দেন। খুনের ভয়াবহতা বিচার করেই আদালত মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। হুগলির পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কামনাশিস সেন জানান, আদালত ও বিচার ব্যবস্থার উপর সকলকেই আস্থা রাখতে হবে। কারণ, অপরাধীর শাস্তি হবেই।