অভিনব কায়দায় এটিএম কার্ড হাতিয়ে জালিয়াতি। আলিপুরদুয়ারের কামাখ্যাগুড়িতে পুলিশের জালে ধরা পড়ল উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড়ের ৩ বাসিন্দা। অভিযুক্তদের থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে একটি বিলাসবহুল গাড়ি, ৪৮টি এটিএম কার্ড, ৫টি এটিএম ব্লকার স্টিক, সেলোটেপ, নগদ ৪ হাজার টাকা ও তিনটি স্মার্ট ফোন।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, বেছে বেছে গ্রামের মানুষজনদের টার্গেট করত এই প্রতারকরা। তারা মূলত জাল পাতত বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম-এর সামনে। গ্রাহকরা এটিএমে টাকা তুলতে এলে এই প্রতারকরা তাঁদের বলত সংশ্লিষ্ট এটিএমে টাকা নেই। নিজেরাও হাতে এটিএম কার্ড নিয়ে টাকা তোলার অভিনয় করত। সামনের মানুষটিকে সাহায্য করার অছিলায় তাঁদের এটিএম কার্ডটি চেয়ে নিয়ে নিজেরা টাকা তোলার চেষ্টা করার নাটক করত। পরে সেই এটিএম কার্ডটি বদলে ফেলত একই ব্যাঙ্কের অন্য এটিএম কার্ডের সঙ্গে। তারপর টাকা উঠছে না বলে গ্রাহকের হাতে তুলে দিত ভুয়ো এটিএম কার্ডটি।
রবিবার সন্ধ্যায় কামাখ্যাগুড়ির এক যুবক একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম-এ টাকা তুলতে গেলে একই কায়দায় প্রতারিত করা হয় তাঁকে। প্রাথমিক অবস্থায় ওই যুবক কিছু টের না পেলেও কিছুক্ষণ পরেই তাঁর সন্দেহ হওয়ায় তিনি এটিএম কার্ডটি বের করে দেখেন একই ব্যাঙ্কের হলেও তা আদতে তাঁর নয়। ওই যুবকই কামাখ্যাগুড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই অভিযোগের উপর ভিত্তি করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ভাটিবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির নাকা তল্লাশির সময় ধরা পড়ে যায় ওই প্রতারকরা।
তদন্তে নেমে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। জানা গিয়েছে, তিন প্রতারক উত্তরপ্রদেশের প্রতাপগড় থেকে গুয়াহাটি পর্যন্ত প্রতারণার জাল বিছিয়েছিল। বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে তারা উত্তরপ্রদেশ থেকে অসম যাচ্ছিল। ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে গ্রামীণ এলাকার এটিএমগুলিতে প্রতারণার ফাঁদ পাতত তারা। আবার ফেরার পথে বিকল্প রাস্তা ধরে মানুষকে ঠকাতে ঠকাতে ফিরত প্রতাপগড়ে। এই প্রতারণার জাল কতটা বিস্তৃত, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
(তথ্য সহায়তা পিনাকী চক্রবর্তী)