• কমছে কাশ্মীরি শালওয়ালাদের আগমন, দরদাম করে কিস্তিতে পোশাক কেনায় ধাক্কা 
    আজকাল | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: শীত পড়লেই ওঁদের দেখা মিলত। গ্রামে-গঞ্জে সাইকেলের পিছনে পশরা বেঁধে ঘুরে-ঘুরে কাশ্মীরি শাল, সোয়েটার, জ্যাকেট বিক্রি করতেন। গ্রামের মানুষজন মাস চারেকের কিস্তিতে কিনতেন শীতের পোশাক। ডিসেম্বর শেষ হতে চললেও এবার কাশ্মীরি শালওয়ালাদের শহরে থেকে গ্রামে, দেখা নেই বললেই চলে। কাশ্মীরি পশমের শাল ও প্রকৃত শাল বিক্রেতাদের 'মিস' করছেন বহু লোক।  এক দশক আগের কথা। বঙ্গে শীত পড়লেই শ্রীনগর, পহেলগাঁও, জম্মু থেকে ব্যবসায়ীরা চলে আসতেন রাজ্যের অন্য প্রান্তের মতো হাওড়া জেলাতেও। ডোমজুর, আমতা, বাগনান, উলুবেড়িয়া এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিতেন। তারপর শুরু হত ঘুরে-ঘুরে ব্যবসা। ওই সময় হাওড়ায় ছিল না শপিং মল। হাওড়া হাট ছাড়া বড় কোন পাইকারি বাজারও ছিল না। এই ব্যবসায়ীরা জমিয়ে মাস চারেক ব্যবসা করে নিতেন। পরবর্তী এক দশকে ভাগীরথী দিয়ে গড়িয়েছে অনেক জল। হাওড়া জেলা জুড়ে অজস্র বাজার ও মল গড়ে উঠেছে। ফুলেফেঁপে উঠেছে কারবার। বাজারে ছেয়েছে কমদামী পশরায়। তারপরেও কাশ্মীরি শালওয়ালাদের কদর থেকে গিয়েছে গ্রাম-বাংলায়।         

    আমতার শিক্ষারত্ন পুরষ্কার পাওয়া প্রাক্তন শিক্ষক অরুণ পাত্র বলেন, 'ওঁরা আসলেই বুঝে যেতাম শীত এসে গিয়েছে। খুব দরদাম করে শাল, সোয়েটার কিনতে পারতাম। কিন্তু সময়টা বদলেছে অনেক। মানুষজন বছরভর মল বা বড় দোকানে কেনাকাটা করছেন। বিক্রি আগের মতো আর হচ্ছে না। তবুও আমরা ওঁদের মনে রেখেছি। এই শীতে যদি আসে নিশ্চয় শাল একটা কিনব।' প্রাক্তন শিক্ষক অশোক পাত্র বলেন, 'ওঁদের জন্যই বাংলার মানুষজন কাশ্মীরের শাল সোয়েটার সম্পর্কিত সম্যক ধারণা পেয়েছে। কারণ সবাই তো আর কাশ্মীর ভ্রমণে গিয়ে শাল, সোয়েটার কিনে আনেননি।'    রঙিন শালে থাকত নকশাকাটা। সোয়েটার হত হাতে-বোনা। দুপুর গড়ালে সাইকেলের বেল বাজিয়ে পাড়ায়-পাড়ায় ঘুরে বেড়ানো কাশ্মীরি শাল বিক্রেতাদের চেনেন না এমন মানুষের সংখ্যা কম। শপিং মল, বড়ো বাজার হলেও কাশ্মীরিদের বিক্রি করা শীতের পোষাকে মিলত আলাদা আরাম। দরদাম করে মাস চারেকের কিস্তিতে মিলে যেত শীতের পোশাক। সময়ের সঙ্গে সবটাই অতীত হতে চলেছে।
  • Link to this news (আজকাল)