মনোরঞ্জন মিশ্র: রাতের অন্ধকারে বাঘিনীর গতিবিধি বদল করতে শুরু করেছে বাঘিনীটি। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গা স্থান বদল করছে বাঘিনীটি। তৎপর রয়েছে বন বিভাগ। একাধিক যায়গায় মোতায়ন রয়েছে বন কর্মীর। রাতের অন্ধকারে বাঘিনীকে ফাঁদে ফেলতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শুয়োর। বাঘিনীকে খাঁচাবন্দী করতে সেই শুয়োরকে রাখা হবে খাঁচায়। রাতের অন্ধকারে পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের কনকনে ঠান্ডায় আগুন জ্বালিয়ে পাহারা জঙ্গল পাহারা দিচ্ছেন বন কর্মীরা।
কেউ রয়েছেন গাছের ডগায়। এভাবেই দ্বিতীয় দিন পার হতে চলল। দুদিন ধরে বাঘিনীকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেও বিফল বন দফতর। পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়ের রাইকা এবং কেশরা জঙ্গলে বাঘিনী ঘোরাফেরা করছে। বাঘিনীর গতিবিধি লক্ষ্য রাখতে বসানো হচ্ছে ট্র্যাপ ক্যামেরা। এলাকায় ১৫ টি জায়গায় বনকর্মীদের টিম মোতায়েন রয়েছে। তারপরও খনও অধরা বাঘিনী।
পরিস্থিতির খোঁজ নিতে বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়ের কেশরা জঙ্গলে পৌঁছয় পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, পুরুলিয়া বনবিভাগের আধিকারিকেরা, উড়িষ্যার সিমলিপাল রিজার্ভ ফরেস্টের বিশেষ দল এবং সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের থেকে আসা বিশেষ টিম। বাঘিনীকে খাঁচাবন্দী করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সকলকে। একের পর এক জায়গা পরিবর্তন করে চলেছে বাঘিনীটি। তাকে ধরতে পাতা হয়েছে ফাঁদ। তবুও খাঁচাবন্দী করতে পারছে না বনবিভাগ।
এদিকে যমুনার আতঙ্কে কাঁপছে বান্দোয়ানবাসী। পুরুলিয়া বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়ের কেশরা জঙ্গলে রয়েছে ওই বাঘিনী। একদিন পার হয়ে গেলেও বাঘিনীকে খাঁচাবন্দী করতে পারেনি বনবিভাগ। কেশরা জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলিতে জারি করা হয়েছে সতর্কবার্তা। বাঘিনীর আতঙ্কে মানুষ প্রায় গৃহবন্দী। বন্ধ হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জনজীবন। গ্রাম ছেড়ে বেরোতে পারছেন না কেউ। খাঁ খাঁ করছে রাস্তাঘাট। এ সময় আমন ধান বাড়িতে তোলার সময়। অথচ মানুষ গ্রামের বাইরে না হওয়ায় মাঠের পাকা ধানের ফসল, মাঠের সবজি মাঠেই পড়ে রয়েছে। বাঘের আতঙ্কে দৈনন্দিন কাজেও বেরোতে পারছেন না এলাকার মানুষ।
গৃহপালিত পশুগুলিকেও গ্রামের ভেতরে বন্দী করে রেখেছেন গ্রামবাসীরা। মানুষের আতঙ্ক দূর করতে এলাকায় মাইকিং প্রচার চালানো হচ্ছে। জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় মোতায়েন রয়েছে রয়েছে বনকর্মীরা। একদিন পার হয়ে গেলেও পুরুলিয়া বনবিভাগ, উড়িষ্যার সিমলিপাল রিজার্ভ ফরেস্টের বিশেষ দল এবং সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের থেকে আসা বিশেষ টিম একত্রিত হয়ে বাঘিনীকে বাগে আনতে ব্যর্থ। বন দফতরের পক্ষ থেকে জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় শুয়োর, ছাগল এবং গবাদি পশুদের দিয়ে ফাঁদ পাতা হলেও সেই ফাঁদে পা মাড়ায়নি যমুনা।