• আরজি কর মামলার তদন্তে নয়া মোড়, ধর্ষণ-খুনের অকুস্থলই নয় সেমিনার রুম!
    এই সময় | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এই সময়: আরজি করের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড়। গত ৯ অগস্ট আরজি করের ক্যাজ়ুয়ালটি বিল্ডিংয়ের চার তলার যে সেমিনার রুম থেকে উদ্ধার হয়েছিল তরুণী চিকিৎসকের মৃতদেহ, সেই রুমটি আদৌ কি এই ধর্ষণ-খুনের অকুস্থলই নয়?— এই সংশয় জোরালো হলো সেন্ট্রাল ফরেন্সিক রিসার্চ ল্যাবরেটরির (সিএফএসএল) রিপোর্টে। সূত্রের দাবি, সিএফএসএল-এর রিপোর্ট সম্প্রতি জমা পড়েছে তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের কাছে।

    সেই রিপোর্টে নির্দিষ্ট ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, নির্যাতিতার সঙ্গে আততায়ীর সম্ভাব্য ধস্তাধস্তির কোনও চিহ্ন মেলেনি সেমিনার রুমে থাকা নীল ম্যাট্রেসের উপর। এমনকী সেমিনার রুমের ভিতরে অন্যত্রও তেমন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তা হলে যে প্রশ্নটা স্বাভাবিক ভাবেই উঠছে, সেটা হলো, আদৌ সেমিনার রুমে ওই তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুন করাই হয়নি?

    সেক্ষেত্রে কলকাতা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল এবং পরবর্তী কালে সিবিআই ধর্ষণ-খুন মামলায় যে তদন্ত করল, সেখানে কি গোড়াতেই গুরুতর ত্রুটি থেকে যাচ্ছে? ওই সেমিনার রুমকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার অকুস্থল বলে তা হলে এতদিন দেখানো হলো কেন? সেটাও কি তথ্যপ্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যে?আরজি করের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পর প্রথম থেকেই নির্যাতিতার পরিবার ও আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের বড় অংশ অভিযোগ করছিলেন, এই ঘটনায় অনেক তথ্যপ্রমাণ লোপাট করা হয়েছে।

    এমনকী, হাসপাতালের অন্য জায়গায় তরুণীকে ধর্ষণ-খুন করার পরে সেমিনার রুমে দেহটি এনে পরিকল্পনামাফিক প্লান্ট করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে। যদিও কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে এই অভিযোগ আগেই অস্বীকার করা হয়েছিল। আবার আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে সিবিআই তথ্যপ্রমাণ লোপাটের গুরুতর অভিযোগ করলেও সেমিনার রুমই ঘটনার অকুস্থল কি না, তা নিয়ে স্পষ্ট করে কোনও দাবি জানায়নি।

    সিএফএসএলের এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি সিবিআই আবার নতুন করে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার তদন্ত করবে? ইতিমধ্যেই শিয়ালদহ আদালতে ধর্ষণ-খুন মামলায় ট্রায়াল শুরু হয়েছে। ধর্ষণ-খুনে মূল অভিযুক্ত হিসেবে সঞ্জয় রায়কে চিহ্নিত করে সেই ট্রায়াল প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন যদি অকুস্থল নিয়েই প্রশ্ন উঠে যায়, তা হলে এই ট্রায়াল কোন পথে এগোবে, তা নিয়েও সংশয়ে প্রবীণ আইনজ্ঞরা।

    সিএফএসএলের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘একটা ২৪X৭ অপারেশনাল হাসপাতালের করিডরে যেখানে অনেক অফিশিয়াল অ্যাটেন্ড্যান্ট থাকার কথা, সেখানে অপরাধ ঘটানোর জন্য সবার নজর এড়িয়ে কেউ সেমিনার রুমে ঢুকে পড়বে, এটার সম্ভাবনা কম।’ ফলে সঞ্জয়ই ধর্ষণ–খুনে জড়িত, নাকি আরও কেউ— সেই সংশয়ও তৈরি হয়েছে।

  • Link to this news (এই সময়)