এই সময়, শান্তিনিকেতন: কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান ও রাজ্য প্রশাসনের তিক্ততা এখন অতীত। চার বছর পরে এ বার হাতে হাত ধরে পৌষমেলার আয়োজন করেছে দু’পক্ষই। সোমবার পৌষ উৎসবের সূচনায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিনয়কুমার সোরেন, বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ।
বৈতালিক, রবীন্দ্রসঙ্গীত, বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের পাঠ, বাউলগানের মধ্য দিয়ে শুরু হলো ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ শান্তিনিকেতনে পৌষমেলার৷ ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এই মেলা।
২০১৯ সালে শেষ বার মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ও রবীন্দ্রনাথের প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা করেছিল৷ ২০২০–তে কোভিড পরিস্থিতির জন্য মেলা হয়নি। এর পরে বিশ্বভারতীর তৎকালীন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত চরমে পৌঁছয়।
অভিযোগ–পাল্টা অভিযোগে কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্বভারতীর সঙ্গে রাজ্য সরকার তথা বীরভূম প্রশাসনের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। এমনকী, খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিরক্তি প্রকাশ করেন সেই সময়ে। এর ফলে ২০২১–২০২৩ সালে মেলা করেনি ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী৷ এ বার ফের পূর্বপল্লির মাঠে প্রথা মেনে হচ্ছে পৌষমেলা৷ তাই বাড়তি আনন্দ সবার মধ্যে।
এ দিন সকালে ঐতিহ্য মেনে গৌর প্রাঙ্গণে ভোরবেলা বৈতালিক–সানাই–উপাসনার মাধ্যমে সূচনা হয় ১৮১তম পৌষ উৎসবের। দিনভর চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ইতিমধ্যেই হাজির হয়েছেন বহু পর্যটক। বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিনয়কুমার সোরেন বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে মিলে এ বার মেলার আয়োজন করেছি। খুবই আনন্দের বিষয়। আশা করি, সবাই মেলা উপভোগ করবেন। নিয়ম মতো সব অনুষ্ঠান হবে।’
জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখও উপস্থিত ছিলেন এ দিনের অনুষ্ঠানে। তিনি বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ যে কতটা আনন্দের, গর্বের, তা এখানে না এলে বোঝা যাবে না। জেলা প্রশাসন–বিশ্বভারতী সবাই মিলেমিশে পৌষমেলার আয়োজন করেছি।’
বিশ্বভারতীর ছাত্রী কোয়েল মুখোপাধ্যায়, সুশ্বেতা দাশগুপ্ত, পারমিতা ভট্টাচার্য, চিরশ্রী রায় বলেন, ‘২০১৯–এর পর সেই চেনা ছন্দে মেলা হচ্ছে, এটা খুবই আনন্দের৷ সবাই এটাই চেয়েছিলাম। মেলার কয়েক দিন শুধুই ঘোরাঘুরি ও খাওয়া-দাওয়া৷’