• অসমে ব্লাস্টের প্ল্যান ছিল এবিটি-র জঙ্গিদের
    এই সময় | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এ রাজ্যে স্লিপার সেল সক্রিয় করে পড়শি রাজ্য অসমে বিস্ফোরণ ঘটানোর প্ল্যান ছিল এবিটি জঙ্গিদের। অসম, কেরালা এবং পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অভিযানে তিনটি রাজ্য থেকে ৮ জন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করার পরে ধৃতদের জেরা করে এই তথ্য উঠে এসেছে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, কেরালা থেকে শাদ রাডি ওরফে সাহেব শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তিনি ভুয়ো নথি জমা করে ৩০ হাজির টাকা দিয়ে মুর্শিদাবাদ থেকে নিজের পাসপোর্ট বানিয়ে নিয়েছিলেন।

    এই শাদের দূর সম্পর্কের ভাই আবার সাদ্দাম শেখ। তিনি আনসারুল্লা বাংলা (এবিটি) সংগঠনের মাথা জসিমুদ্দিন রহমানির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, তিন মাস আগে শাদ পাঁকুড়ে গিয়েছিলেন। সেখানে একটি খাদানে ওই এলাকায় আগে থেকে জমায়েত হওয়া কয়েকজনের সঙ্গে তিনি বৈঠক করেন। ওই আলোচনায় পড়শি রাজ্যে নাশকতা চালানোর বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা করা হয়।

    এরপর ওই এলাকার পরিচিত কিছু ব্যবসায়ীর কাছে জিলোটিন স্টিক এবং ডিটোনেটরের অর্ডার দেওয়া হয়। দরদাম করা হয় আগ্নেয়াস্ত্রেরও। পুরো বৈঠকটি মিনারুল শেখের উদ্যোগে হয়েছিল। কিন্তু বিস্ফোরকের সেই অর্ডার রিসিভ করার জন্য যে প্রয়োজনীয় অর্থ বাংলাদেশে বর্তমান পরিস্থিতির জেরে আর এবিটির জঙ্গিদের হাতে পৌঁছয়নি। ফলে বিস্ফোরক সংগ্রহ করতে পারেননি তাঁরা।

    এ কারণে হামলার ছকও পিছিয়ে দেওয়া হয়। বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত চুপচাপ অপেক্ষা করতে। তদন্তকারীদের বক্তব্য, বিস্ফোরক সামগ্রী এদের হাতে গেলে তা অসমে পৌঁছে দেওয়ার কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু এবিটির মূল মাথা জসিমুদ্দিনের ঘনিষ্ঠ সাদ্দাম এবং আবদুল্লা টাকার জোগান ঠিক সময়ে দিতে না পারায় স্লিপার সেলের সদস্যরা অপেক্ষা করতে করতে ধরাই পড়ে যান।

    তদন্তে উঠে এসেছে, মিনারুল শেখ-সহ বাকি অভিযুক্তরা একটি কমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ভিনদেশের বেশ কয়েকটি নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত কথাবার্তা বলতেন। সেখানেই তাঁদের দেওয়া হতো বিশেষ অ্যাসাইনমেন্ট। আর তার উপর ভিত্তি করেই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে স্লিপার সেলের সদস্য নিয়োগের কাজ করা হচ্ছিল।

    একই সঙ্গে চলছিল জঙ্গি সংগঠনের মতাদর্শে বাংলার যুব সম্প্রদায়ের মগজ ধোলাই করার কাজ। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ধৃত মিনারুল ২০১৬ এবং ২০১৮ সালে বাংলাদেশে গিয়ে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করাই শুধু নয়, অস্ত্র প্রশিক্ষণও নিয়েছিলেন।

    পাশাপাশি আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটায় মিনারুলের সহায়তায় একাধিক বৈঠক করেন শাদ। সেখানে কম বয়সি যুবকদের এবিটিতে নিয়োগ, অপারেশনাল ইউনিট তৈরি থেকে একাধিক বিষয়ে আলোচনা করেন তিনি। গোয়েন্দারা মনে করছেন, যেহেতু অসমকে প্রথম টার্গেট করা হয়েছিল, তাই কাছাকাছি এলাকা হিসেবে পুরো পরিকল্পনা সঠিক ভাবে সম্পন্ন করার জন্য ফালাকাটাকেই বেছে নেওয়া হয়। যাতে নাশকতার পরে এরাজ্যে ফিরে এসে গা ঢাকা দিয়ে থাকা যায়।

  • Link to this news (এই সময়)