• ভিড় বাড়ছে মা–ক্যান্টিনে, বেজায় বিড়ম্বনায় পুরসভা
    এই সময় | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • করোনাকালে লকডাউনের সময়ে কেউ যাতে অভুক্ত না থাকেন, তার জন্যে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শে কলকাতার প্রতিটি ওয়ার্ডে মা–ক্যান্টিন চালু করেছিল পুরসভা। তার পর বেশ কয়েক বছর কেটে গিয়েছে। মা ক্যান্টিন এখনও চলছে। যতদিন যাচ্ছে ভিড়ও বেড়ে চলেছে। খরচের বহর বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খাচ্ছে পুরসভা।

    বাজারে জিনিসপত্রের দাম ঊর্ধ্বমুখী হলেও মা ক্যান্টিনে দুপুরে মাত্র ৫ টাকায় ভাত, ডাল, সব্জি, ডিম পাওয়া যায়। কিন্তু খরচ হয় ২৫–৩০ টাকা। বাড়তি যা খরচ, সেটা সরকারকে ভর্তুকি দিতে হয়।

    পুরসভার এক শীর্ষকর্তা জানাচ্ছেন, যখন মা ক্যান্টিন প্রথম চালু হয়েছিল তখন এক–একটি ক্যান্টিনে ১০০টি করে প্লেট বরাদ্দ ছিল। পরে সেটা বাড়িয়ে ১৫০ করা হয়। কিন্তু তাতেও চাহিদা না মেটায় অনেক জায়গায় প্লেটের সংখ্যা বাড়িয়ে ৩০০ করা হয়েছে।

    মেয়র পারিষদ (সমাজকল্যাণ) মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মা ক্যান্টিনে ভিড় বেড়েই চলেছে। সে জন্যে অনেক কাউন্সিলার প্লেটের সংখ্যা বাড়াতে বলছেন। কিন্তু যেহেতু টাকাটা রাজ্য সরকার দেয়, তাই আমরা চাইলেই বাড়াতে পারব না।’

    প্রাক্তন মেয়র বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের আবার মন্তব্য, ‘মা ক্যান্টিনে ভিড় বাড়াটা একেবারেই গর্বের বিষয় নয়। মানুষ খাবার জন্যে লাইন দিচ্ছেন, এতে লজ্জিত হওয়া উচিত।’

    কলকাতা পুরসভার ১০৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তথা ১১ নম্বর বরোর চেয়ারপার্সন তারকেশ্বর চক্রবর্তী বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডে যে মা ক্যান্টিন রয়েছে সেখানে এখন ১৫০ জনের খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিদিনই খাবার শেষ হয়ে যায়। একটু দেরি করে এলে আর কেউ খাবার পান না। আমাদেরও কিছু করার থাকে না।’

    তাঁর কথায়, ‘মা ক্যান্টিনে যাঁরা খেতে আসেন তাঁদের সবাই যে গরিব, এমনটা কিন্তু নয়। এমনও দেখেছি, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী পর্যন্ত দুপুরের খাবার নিচ্ছেন। অনেকে বাড়িতে রান্নার ঝামেলা এড়াতে খাবার নিয়ে চলে যান।’

    পুরকর্তারা অবশ্য সন্দেহ করছেন, মা ক্যান্টিনের হিসাবে ‘জল’ থাকতে পারে। সংখ্যাটা যতটা দেখানো হচ্ছে, সেটা আদৌ সত্যি কিনা, তা নিয়ে নজরদারি শুরু হয়েছে। সম্প্রতি একটি নির্দেশিকাও জারি করেছেন পুর–কমিশনার। তাতে বলা হয়েছে, কত প্লেট খাবার বিলি হলো, সেই সংখ্যা পরের দিন বেলা ১২টার মধ্যে কেএমসি পোর্টালে নথিভুক্ত করতেই হবে। প্রতি মাসে খরচের হিসাব পেশ করতে হবে বরো আধিকারিককে। স্টকে কতটা চাল, ডাল, ডিম আছে—তারও রোজকার হিসাব জমা করতে হবে।

  • Link to this news (এই সময়)