সংবাদদাতা, কাঁথি: আগামীকাল, বুধবার বড়দিনে দীঘা সহ অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে পিকনিকে প্লাস্টিক ও থার্মোকলের ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল প্রশাসন। অতিরিক্ত ভিড় সামাল দেওয়া সহ অন্যান্য প্রস্তুতি নিয়ে সোমবার ‘জাহাজবাড়ি’তে এক বৈঠক করে দীঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন সংস্থা। বৈঠক থেকে একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করা হয়। বলা হয়েছে, প্লাস্টিক-থার্মোকল ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। পিকনিক পার্টিগুলিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট করা স্পটেই পিকনিক করতে হবে। যানজট এড়াতে নির্দিষ্ট জায়গাতেই গাড়ি পার্কিং করতে হবে। বড়দিন ও ইংরেজি নববর্ষের এই সময়কালে দীঘা সহ মন্দারমণি, তাজপুর, শঙ্করপুর প্রভৃতি পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের ঢল নামে। হোটেল-লজগুলিও পর্যটকদের ভিড়ে ঠাসা থাকে। বিশেষ করে বড়দিনে পিকনিক করার জন্য দীঘায় হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমান। সেকথা মাথায় রেখে এদিনের এই বৈঠক।
বৈঠকে সংস্থার মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক অপূর্বকুমার বিশ্বাস, রামনগর-১ ও ২ ব্লকের প্রশাসনিক আধিকারিক এবং জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন দীঘা ট্রাফিক বিভাগের অফিসাররা। বৈঠক শেষে এইসব নির্দেশিকার কথা জানিয়ে পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্দেশে এদিন থেকেই মাইকিং করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। কিছুদিন আগেই নির্মীয়মাণ জগন্নাথধামের কাজ দেখতে দীঘায় এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর আগমনের আগেই দীঘা আলোকসজ্জা সহ সবদিক দিয়ে সেজে উঠেছিল। বড়দিন এবং নতুন বছরে সেই সজ্জা পর্যটকদের কাছে উপহার হতে চলেছে।
উন্নয়ন সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে, সৈকত লাগোয়া ঝাউবনে যত্রতত্র পিকনিক করা যাবে না। পিকনিক করতে আসা বাস সহ অন্যান্য ট্যুরিস্ট গাড়িগুলিকে হেলিপ্যাড ময়দানের কাছে পার্কিংজোনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পিকনিক করার জন্য হেলিপ্যাড ময়দান সংলগ্ন এলাকা, ওসিয়ানা ঘাট সহ আরও কয়েকটি স্পট নির্দিষ্ট রয়েছে। পর্যটক সহ পিকনিক পার্টিদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, ঝাউবনে যত্রতত্র পিকনিক করা যাবে না। সেখানে কোনওভাবে প্লাস্টিক বা থার্মোকলের সামগ্রী ব্যবহার করা যাবে না। বড়দিনে পর্যটকদের গাড়ি সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার গাড়ি দীঘায় ঢোকে। এরফলে যানজট হয়। যা সকলের কাছে অন্যতম মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই বলা হয়েছে, কোনওভাবেই রাস্তার উপর গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা যাবে না। রাস্তায় গাড়ি রেখে কেনাকাটা বন্ধ করতে হবে। ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা পুলিসকর্মীরা যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করবেন।
দীঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, এবছরও এই সময়টাতে পর্যটকের ঢল নামবে। তাছাড়া দীঘার জগন্নাথধাম এখন পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণের বিষয়বস্তু। তাই এবারের পরিস্থিতি আলাদা। পর্যটক এবং পিকনিক পার্টির যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তারজন্য আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার দাবি জানিয়েছি।
উন্নয়ন সংস্থার মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক বলেন, ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাস মানেই পর্যটন মরশুম। সেকথা মাথায় রেখেই দীঘা সহ অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রে আগত পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য রাস্তাঘাট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। আলো সহ অন্যান্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। পিকনিক পার্টির জন্য পর্যাপ্ত পানীয় জল, শৌচালয়ের ব্যবস্থা সহ প্রয়োজনীয় যা যা পদক্ষেপ করার তা করা হয়েছে। পিকনিকে ব্যবহৃত নানা সামগ্রী যত্রতত্র ফেলে দূষণ ছড়ানো হচ্ছে কি না, তার জন্য সৈকতে উন্নয়ন সংস্থা নিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবকরা নজরদারি চালাবেন। পিকনিকের পর সমস্ত বর্জ্য রাখার জন্য নির্দিষ্ট ভ্যাট করে দেওয়া হয়েছে।