• কুয়াশা ও দূষণের জেরে ধোঁয়াশায় ঢাকছে মেদিনীপুর শহরের চারপাশ
    বর্তমান | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: সন্ধ্যা থেকেই ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন চারিপাশ। কমেছে দৃশ্যমানতা। মেদিনীপুর শহরের অচেনা এই দৃশ্যে হতবাক হচ্ছেন অনেকেই। কিন্তু কুয়াশার কারণ সামনে আসতেই বেশ উৎকণ্ঠা দেখা দিচ্ছে। কারণ কেবল শীতের স্বাভাবিক কুয়াশা হিসেবে দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, কুয়াশার সঙ্গে দূষণ মিশে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। কুয়াশার সঙ্গে দূষণের যোগে কমছে দৃশ্যমানতা। একইসঙ্গে বাড়িয়ে দিচ্ছে শীতের অনুভূতি। জানা গিয়েছে, শহরের বাতাসে ভাসমান কণার (পিএম) পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই বেশি। প্রতি কিউবিক মিটারে পিএম ২.৫ এর মাত্রা ৫০ এর কম হও প্রয়োজন। কিন্তু শহরে সেই মাত্রা একশোর বেশি।মেদিনীপুরের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক প্রভাতকুমার শীট বলেন, শীতের স্বাভাবিক কুয়াশা থাকলে সেটি সূর্যের আলোতে সরে যেত। একইসঙ্গে সূর্যের আলো ভূপৃষ্ঠে আসত। কিন্তু এই কুয়াশাটা ধোঁয়া ও ধুলোর সঙ্গে মিশে গিয়েছে। এটাকে বলে থাকি ধোঁয়াশা। অর্থাৎ কুয়াশার সাথে দূষণ মিলিত হয়ে এই আবহাওয়ার সৃষ্টি করেছে।


    মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা চন্দনকুমার চক্রবর্তী বলেন, গাড়ির সংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে। শুধু মেদিনীপুর শহরে ৮ হাজারের বেশি বাইক সারাদিনে যাতায়াত করে। দূষণ দিন দিন বাড়ছে। প্রশাসনের পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। শিশুরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাভাবিক কুয়াশার ওজনের চেয়ে এই ধোঁয়াশা অনেকটাই ভারী হয়ে যাচ্ছে। ভারী হয়ে এটি ভূপৃষ্ঠ থেকে তিন-চার কিলোমিটারের ওপর পর্যন্ত একটি আস্তরণ তৈরি করে। একইসঙ্গে এটি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়ে যাচ্ছে। মূলত এটি দূষণের একটি আস্তরণ। পরিবেশবিদরা আরও জানিয়েছেন, ঘন শীতের বাতাস সব ধরনের দূষণকে আটকে রাখে। এই ধোঁয়াশা খুবই বিপজ্জনক। এতে শ্বাস নেওয়ার ক্ষেত্রেও তৈরি হয় প্রতিবন্ধকতা। জানা গিয়েছে, শহরে পিএম ১০ এর মাত্রাও অনেকটাই বেশি। শহরে পিএম ১০ এর মাত্রা ১২০ এর বেশি। যা ৫০ এর কম থাকা বাঞ্ছনীয়। এছাড়াও বাড়ছে কার্বন মনোক্সাইড। মেদিনীপুরের চিকিৎসক দিবাকর সামন্ত বলেন, কুয়াশা বেড়ে যাওয়ায় নানা রোগের উপসর্গ নিয়ে রোগীরা আসছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকের শ্বাসকষ্টের সঙ্গে হাঁচি, কাশির সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। এছাড়া অনেকের জ্বরও আসছে। সেক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তাতে অনেকটাই স্বস্তি পাওয়া যাবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে।মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এমএমএসভিপি জয়ন্ত রাউত বলেন, শ্বাসকষ্ট সহ নানা উপসর্গ নিয়ে রোগীরা আসছেন। বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করার প্রয়োজন রয়েছে। দূষণ থেকে অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে। এদিন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে যান সুদেব মল্লিক। তিনি বলেন, হঠাৎ করেই শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। চিকিৎসক ওষুধ দিলেন। তিনি বলছেন প্রয়োজনে অক্সিজেন নিতে হতে পারে।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)