• মাসে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার কারবার করত মেমারির চাচি
    বর্তমান | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: মাসে ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকার গাঁজা বিক্রি করত মেমারির চাচি। পূর্ব বর্ধমান ছাড়াও পশ্চিম বর্ধমান, হুগলি এবং নদীয়া থেকে ক্রেতারা আসত। প্রতি মাসে কয়েক লক্ষ টাকা তার আয় হতো। সেই টাকা সে বহু প্রভাবশালীর কাছে পাঠাত। সেই কারণে থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে সে কারবার চালালেও কেউ তার টিকি ছোঁয়ারও সাহস দেখায়নি বলে স্থানীয়দের দাবি। তাঁরা বলেন, শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কৃষ্টি সিনেমা হলের পিছনেই চাচির গাঁজা বিক্রির কাউন্টার ছিল। ক্রেতারা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেখানে ভিড় করত। সবাই তা দেখত। ওই এলাকায় এক প্রভাবশালী নেতার বাড়ি রয়েছে। কিন্তু কেউই তার বিরুদ্ধে মুখ খোলেনি। মুখ না খোলার পিছনে রহস্য লুকিয়ে রয়েছে বলে তাদের অভিযোগ। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, চাচির সঙ্গে ওড়িশা, অসম এবং ঝাড়খণ্ডের বহু গাঁজা ব্যবসায়ীর যোগাযোগ রয়েছে। সে ওড়িশা এবং অসম থেকে গাঁজা আনত। ওড়িশার গাঁজার দাম কিছুটা কম। কিন্তু অসমের গাঁজার মান উন্নত। সেটির চাহিদাও বেশি। তা বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা লাভ হতো। এছাড়া কোচবিহার থেকেও তার কাছে গাঁজা আসত। সম্প্রতি চাচির কারবার সামাল দিচ্ছিল তার মেয়ে। পুলিস বাড়ি থেকে তাকেই হাতেনাতে ধরে। ৪৭ কেজি গাঁজা এবং ৪১ লক্ষ টাকা সহ পুলিস তাকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, পুলিসি অভিযানের দিন চাচি বর্ধমানে এসেছিল। সে বাড়িতে না থাকায় সেদিন রক্ষা পেয়ে যায়। তবে তার মেয়ে পালাতে পারেনি। এলাকার বাসিন্দারা বলেন, চাচি প্রভাবশালীদের দেদার দান করত। কেউ কোনও অনুষ্ঠান করলে চাচির কাছে হাজির হয়ে যেত। কখনও কখনও তার টাকায় বস্ত্রদানও হয়েছে। ওই এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ২০ বছরের বেশি সময় ধরে কারবার চলছে। মাসে কয়েক লক্ষ টাকা লাভ করায় সে বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়ে ওঠে। তার একাধিক বাড়ি রয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় সম্পত্তি রয়েছে। পুলিস ওই বাড়িতে অভিযান চালালেও ক্রেতাদের আনাগোনা বন্ধ হয়নি। অনেকেই চাচির মেয়ের গ্রেপ্তারির খবর জানে না। তারা বাড়িতে এসে ফিরে যাচ্ছে। টাকা না থাকলে অনেকে জিনিসপত্র বন্ধক রেখে গাঁজা কিনে নিয়ে যেত। এমনকী, সবজির বিনিময়েও তারা গাঁজা বিক্রি করত। অনেককে আবার মুরগি বা ছাগল বন্ধক রেখেও তার কাছে থেকে গাঁজা নিয়ে গিয়েছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)