রাহুল মজুমদার, শিলিগুড়ি
গত কয়েকদিন ধরে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় ওয়ান জ়িরো জ়িরো (১০০)–তে ডায়াল করলে ‘বিপ বিপ’ শব্দ হয়ে কল কেটে যাচ্ছে। আবার কখনও কখনও কন্ট্রোল রুম থেকে আরটি (রেডিও টেলিফোন) তে জানানো যাচ্ছে না। গত সাত– আট মাস সামান্য সমস্যা চললেও কয়েকদিন ধরে এই ঝঞ্ঝাট অনেকটা বেড়ে গিয়েছে।
এমন অনেকেই রয়েছেন যাঁরা ১০০–তে ডায়াল করে যোগাযোগ করতে না পেরে, পুলিশ ডাকতে সরাসরি থানায় হাজির হচ্ছেন। শনিবার রাতে ডিআই ফান্ড মার্কেটে আগুনের খবর জানাতে ১০০ ডায়ালে কল করেও সাড়া না পেয়ে স্থানীয়দের থানায় ছুটে যেতে হয়।
পর পর কয়েকদিন এমন সমস্যা হওয়ার পরে তা সমাধান করতে ভক্তিনগর থানা ডিউটি অফিসারের কাছে একটি মোবাইল ফোন রাখার ব্যবস্থা করেছে। থানার নম্বর কিংবা ১০০ ডায়ালে কল করে না পেলে ওই মোবাইল নম্বরে ফোন করে পুলিশ ডাকা যেতে পারে।
তবে শহরের এই মূল সমস্যার কারণ খোঁজ করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন থানার কন্ট্রোল রুম স্থানান্তরিত করার কাজ শুরু হওয়াতেই ঝামেলা বেড়ে গিয়েছে।
শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের নতুন ভবন তৈরি হওয়ার পরে কন্ট্রোলরুম, টেলিকম সার্ভিস,এসিপিদের দপ্তর এক ছাদের তলায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সে কারণে শিলিগুড়ি থানা ভবনের ওপরে থাকা কন্ট্রোলরুম সরিয়ে মাল্লাগুড়িতে কমিশনারেটের সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
কন্ট্রোল রুমের কিছু অংশ ইতিমধ্যে কমিশনারেটের সদর দপ্তরে স্থানান্তরিত হয়ে গেলেও এখনও খানিকটা অংশ শিলিগুড়ি থানাতেই রয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে আরটি-র টাওয়ার রয়েছে। পুলিশ কর্তারা জানাচ্ছেন, সফটওয়্যার এবং ইন্টারনেট পরিষেবার মাধ্যমে দুটির যোগাযোগের ক্ষেত্রে সংযোগ রাখা হয়। কন্ট্রোলরুমে ফোন এলে সেখান থেকে আরটির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট থানার টহলদারি ভ্যানকে খবর দেওয়া হয়।
এই আরটি পরিচালনার পুরো দায়িত্ব থাকে কমিশনারেটের টেলিকম বিভাগের কাঁধে। আগে শিলিগুড়ি থানা ভবনের ওপরেই একসঙ্গে দুটি ইউনিটের কাজ হতো। আরটি পরিচালনার জন্য শিলিগুড়ি থানাতেও একটি টাওয়ার বসানো ছিল। সম্প্রতি গোটা ইউনিট কমিশনারেটে স্থানান্তরিত হয়েছে। সেখানে পাকাপাকিভাবে সমস্ত যন্ত্রপাতি ইন্সটল করা হচ্ছে। তবে আরটির টাওয়ার এখনও শিলিগুড়ি থানাতে রয়ে গিয়েছে। যে কারণে পুলিশের আপৎকালীন পরিষেবা নম্বর ১০০ ঠিকমতো কাজ করছে না।
বিষয়টি জানার জানার জন্য পুলিশ কমিশনার সি সুধাকরের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন কেটে দিয়েছেন। এসএমএসেরও জবাব দেননি। তবে কমিশনারেট সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ‘আধুনিকীকরণের কাজ চলার ফলে এখন একটু সমস্যা হচ্ছে। মাস খানেকের মধ্যে সাধারণ মানুষ ১০০ ডায়ালের ভোগান্তি থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাবেন।’