চাঁদকুমার বড়াল ■ কোচবিহার
বোনের মেয়েকে ‘দত্তক’ নিয়ে বিপদে পড়েছিলেন কোচবিহারের ফালাকাটার চন্দনা দাস। স্বামীকে নিয়ে জেলও খাটতে হয়েছে তাঁকে। হঠাৎ করে আসা বসন্তের বাতাস উধাও হয়েছিল আইনের মারপ্যাঁচে।
সেই দুধের শিশু শারদীয়া আজ, মঙ্গলবার ফিরে যাবে তার পুরোনো ঠিকানায়। তাকে সুস্থভাবে অসমে পৌঁছতে সোমবার বিকেলে ব্যস্ত ছিলেন এক মহিলা পুলিশকর্মী–সহ দু'জন। সঙ্গে ছিলেন জেলা শিশু সুরক্ষা দপ্তরের কর্মী ও একজন আয়া। তাঁরা সঙ্গে নিয়েছেন গরম পোশাক, গরম জল, সঙ্গে দুধের কৌটো আর ফিডিং বোতল। বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ সাদা রঙের সরকারি গাড়িতে চেপে শারদীয়াকে নিয়ে কোচবিহারের বাবুরহাটের হোম থেকে তাঁরা রওনা দেন অসমের উদ্দেশে।
সব কিছু ঠিক থাকলে মঙ্গলবার নিজের বাড়িতে ফিরে যাবে শারদীয়া। জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক স্নেহাশিস চৌধুরী জানিয়েছেন, শারদীয়াকে মঙ্গলবার অসমের ডিমা হাসাও জেলার চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হবে। এরপর তারা সমস্ত নিয়ম মেনে তার মায়ের হাতে তুলে দেবেন তাকে।
কোচবিহারের ফালাকাটার বাসিন্দা চন্দনা দাস নিঃসন্তান। তাঁর মাসতুতো বোন মল্লিকা দাস থাকেন অসমের ডিমা হাসাও জেলার উমরাংসে। মল্লিকার চার দিনের মেয়েকে চন্দনা মাতৃস্নেহে লালন পালন করবেন বলে নিজের কাছে নিয়ে এসেছিলেন।
সদ্যোজাতকে পেয়ে বেজায় খুশি হয়েছিলেন চন্দনা ও তাঁর স্বামী। চলতি বছরের জুলাই মাসের ঘটনা। সেই সময়ে ন’দিনের মাথায় শিশুটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। ফালাকাটা হাসপাতাল থেকে তাকে নিয়ে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছন তাঁরা।
সেখানে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর ও শিশুটির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে না পারায় চিকিৎসকদের সন্দেহ হয়। খবর যায় পুলিশে। নিয়ম না মেনে অন্যের শিশুকে নিজের হেফাজতে রাখার অভিযোগে পুলিশ চন্দনা দাস ও তাঁর স্বামী উজ্জ্বল দাসকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তাঁরা জামিনে মুক্ত।
এ দিকে দুধের সন্তানটি এতদিন হোমে ছিল। পুজোর আগে তার জন্ম হওয়ায় হোম থেকেই নাম রাখা হয়েছিল শারদীয়া। অবশেষে সোমবার সে নিজের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিল।