নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: জেলার একমাত্র পর্যটন কেন্দ্র মাইথন আবর্জনায় ঢেকেছে। ভিনজেলা ও ভিনরাজ্যের পর্যটকদের কাছে মুখ পুড়ছে পশ্চিম বর্ধমান জেলার। বড়দিনের আগে পিকনিক স্পটে উড়ে বেড়াচ্ছে এঁটো পাতা, কোথাও নেই ডাস্টবিন। হাজার হাজার মানুষ পিকনিক করতে এলেও নেই পর্যাপ্ত পানীয় জল, শৌচালয়ের ব্যবস্থা। শিশুদের বিনোদনের জন্য পিকনিক স্পটে প্রশাসনের উদ্যোগে শিশু উদ্যান গড়ে তোলা হয়েছিল। তাও ঝোপজঙ্গলে ঢাকা। ভরা মরশুমে ব্লক প্রশাসনের এই উদাসীনতায় ক্ষুব্ধ পর্যটকরা। তাঁদের অভিযোগ, পিকনিক করতে ঢোকার আগেই সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির নামে পার্কিং ফি নেওয়া হচ্ছে। তা সত্ত্বেও পরিষেবা মিলছে না। বিষয়টি নিয়ে সালানপুরের বিডিও দেবাঞ্জন বিশ্বাসকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএসের উত্তর দেননি।
বাঙালির পিকনিকের হটস্পট মাইথন। পাহাড়-জলাশয়ে ঘেরা জায়গায় পিকনিক করতে দূরদূরান্ত থেকে আসেন বহু মানুষ। বর্তমান রাজ্য সরকার পর্যটন শিল্পকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। ভ্রমণ কেন্দ্রগুলিকে নতুন করে সাজিয়ে পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটানো হচ্ছে। ব্যতিক্রম মাইথন। এখানে উন্নয়ন যেন থমকে আছে। এক দশক আগে মাইথনের যে চিত্র ছিল এখনও তাই। ডিভিসি বা ব্লক প্রশাসন কেউই এর উন্নয়নে তৎপর হয়নি। কয়েক বছর আগে এই পিকনিক স্পটে একটি শিশু উদ্যান করেছিল ব্লক প্রশাসন। ঘটা করে তার উদ্বোধনও হয়। এখন সেটি ঝোপজঙ্গলে ঢাকা। পিকনিকের মরশুমে পার্কটি ঢেলে সাজা তো দূরের কথা, পরিষ্কার করেনি সালানপুর ব্লক প্রশাসন।
রাত পোহালেই বড়দিন, বহু ভ্রমণপিপাসু বাঙালি মাইথন আসার পরিকল্পনা করেছেন। কিন্তু সোমবার মাইথনে গিয়ে চূড়ান্ত অব্যবস্থা দেখা যায়। রবিবার পর্যটকদের ঢল নেমেছিল। সর্বত্র নোংরায় পরিপূর্ণ। কুকুর-গোরু ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারমধ্যেই মানুষকে পিকনিক করতে হচ্ছে। স্বচ্ছতার লেশমাত্র নেই। ডাস্টবিনের দেখা নেই। পাতা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় যত্রতত্র আবর্জনা উড়ে বেড়াচ্ছে। মোটা টাকা পাকিং চার্জ নেওয়া হলেও সেখানে পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়নি বলে অভিযোগ। এমনকী পর্যাপ্ত শৌচালয়ও নেই। বাঁকুড়ার পাত্রসায়রের রাজুরাম মল্লিক বলেন, পড়ুয়াদের নিয়ে পিকনিক করতে এসেছি। চারদিকে আবর্জনা উড়ছে। পানীয় জল, শৌচালয়ের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। প্রশাসনের বিষয়টি নজর দেওয়া উচিত। রায়না থেকে আসা সৈয়দ মাসুদ আহমেদ কিরমানি বলেন, এখানে পর্যাপ্ত শৌচালয় না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কৈলাসপতি মণ্ডল বলেন, যাঁরা পার্কিং চার্জ নিচ্ছে তাদেরই পিকনিক স্পট পরিষ্কার করার দায়িত্ব। কেন তা করা হয়নি খোঁজ নিচ্ছি।-নিজস্ব চিত্র