বড়দিনের আগে কেশপুরের গ্রামে রাত দিন এক করে চলছে কেক তৈরির কাজ
বর্তমান | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কেশপুর: গ্রামে গ্রামে বড়দিনের আগেই যেন উৎসব লেগে গিয়েছে। বিভিন্ন গ্রামে রাতভর এক নাগাড়ে চলছে কেক তৈরি। সেই কেক যাচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। শীত পড়তেই বাড়তি আয় হওয়ায় খুশি ব্যবসায়ী থেকে গ্রামবাসীরা। ছবিটা কেশপুর ব্লকের একাধিক গ্রামের। গ্রামের প্রতিটি ইউনিট থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় পাঁচ হাজার পিস কেক তৈরি হচ্ছে। কেক কারিগরদের কথায়, কেক তৈরির উপকরণের দাম বাড়লেও কেকের দাম খুব বেশি বাড়েনি। এবছর বাজারে কেকের চাহিদা বেড়েছে। কেশপুরের যুবকরা তাই কেক তৈরি করে বাজারে সাপ্লাই দিচ্ছে। এতে বাড়ছে কর্মসংস্থান। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত কেকের চাহিদা থাকবে বলেই মনে করছেন কেক ব্যবসায়ীরা। জানা গিয়েছে, ২৫ ডিসেম্বর অর্থাৎ বড়দিনকে ঘিরে উৎসবের মেজাজ থাকে রাজ্যের সর্বত্র। আর বড়দিন মানেই বিভিন্ন ধরনের কেক। এদিন কেশপুরে তৈরি হওয়া কেকের প্যাকেজিং ব্যবস্থা তদারকি করছিলেন শরিফুল আলি সর্দার। কাজের ফাঁকে তিনি বলেন, এ বছর দেখছি শহর এলাকার পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকায় কেকের চাহিদা বেশ ভালোই। ক্রিসমাস কেকের পাশাপাশি ক্রিম কেকও ভালোই বিক্রি হচ্ছে। আশপাশের গ্রামের যুবকরাই কেক তৈরির কাজ করছেন।
প্রসঙ্গত, এক সময় গোটা কেশপুরের রাজনৈতিক হানাহানি ছিল নজরকাড়া। সেই সময় সামান্য সরকারি প্রকল্পের সুবিধাটুকু পেতেন না সাধারণ মানুষ। তারই প্রভাব পড়ত কেশপুরের ক্ষুদ্র শিল্প ও ব্যবসায়ীদের উপর। যদিও ২০১৬ সালের পর থেকে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। বর্তমানে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মাধ্যমে মহিলারা স্বনির্ভর হচ্ছেন। এতে গ্রামীণ অর্থনীতি বদলাচ্ছে। পাশাপাশি কেশপুরে বাড়ছে নিত্যনতুন ডিজাইনের কেক তৈরির পরিমাণ। অর্থকরী ব্যবসা হওয়ায় গ্রামের যুবকরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন। শেষ কয়েকবছরে কেশপুরে তৈরি হওয়া কেকের চাহিদা বেড়েছে। জানা গিয়েছে, কেকের পিস প্রতি দাম পাইকারিতে ২০ টাকা থেকে ২০০ টাকা। ক্রিসমাসের সিজনে কেশপুর ব্লকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০ হাজার ছোট বড় কেক প্রস্তুত হয়। কেক তৈরির সময় খাঁটি ময়দা ছাড়াও দেশি ডিম, গাওয়া ঘি ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে উন্নতমানের কেক তৈরি সম্ভব হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন কারিগররা। এদিন শেখ হানিফুল আলি, শেখ আবুল কালাম বলেন, এই সময় খাবার খাওয়ার সময় পাওয়া যায় না। শীতকালে কেকের চাহিদা ভালোই থাকে তাই আয় বাড়ে। গ্রামের প্রচুর ছেলে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। এদিন কেশপুর বাজারে কেক কিনতে এসেছিলেন পেশায় চাষি সঞ্জীব মণ্ডল। তিনি বলেন, বাড়ির খুদে সদস্যদের দাবি বাজার থেকে ফেরার সময় কেক নিয়ে যেতে হবে। কেশপুরের তৈরি কেকের স্বাদই আলাদা।-নিজস্ব চিত্র