• মা ফ্লাইওভার যেন গ্রাঁ প্রি ট্র্যাক! স্পোর্টস কারের সঙ্গে রেস সুপারবাইকের
    বর্তমান | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • স্বার্ণিক দাস, কলকাতা: ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর। ‘দিনেদুপুরে বাইকের গতি ১৮৬ কিলোমিটার’ শীর্ষক একটি খবর ছবি সহ প্রকাশিত হয়েছিল ‘বর্তমান’-এ। বেপরোয়া বাইকচালকদের গতিতে রাশ টানার জন্য তখন নরম সুরে ‘আব্দার’ করেছিল বিধাননগর পুলিস। তাতে যে মা ফ্লাইওভারে গতি-দৌরাত্ম্যের কোনও বদল হয়নি, তার জলজ্যান্ত প্রমাণ শনিবার সকালে ওই উড়ালপুলে দুর্ঘটনায় জোড়া মৃত্যুর ঘটনা। তারপরও অবশ্য হুঁশ ফেরেনি! দেদার চলছে রেসিং। ১৬৪ কিলোমিটারের বেশি গতিতে একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার খেলায় নামছে ৪০ লাখি সুপার বাইক, কোটি টাকার স্পোর্টস কার। মা ফ্লাইওভার যেন গ্রাঁ প্রি’র রেসিং ট্র্যাক! 


    শনিবার সকালে বিনা হেলমেটে জয়রাইডে বেরিয়েছিলেন বউবাজারের দুই যুবক। অত্যধিক গতির কারণে সায়েন্স সিটির কাছে মা ফ্লাইওভারে নিয়ন্ত্রণ হারায় তাঁদের স্পোর্টস বাইক। উড়ালপুলের সাইড রেলিংয়ে ধাক্কা মারে সেটি। অনেকটা নীচে বিশ্ব বাংলা সরণিতে ছিটকে পড়েন চালক ও আরোহী। ঘটনাস্থলেই তাঁদের মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ফ্লাইওভারের প্রতি বাঁকে ব্যারিয়ার বসানোর পরামর্শ দেন কলকাতার পুলিস কমিশনার মনোজ ভার্মা। কিন্তু তাতে কি আদৌ বেপরোয়া বাইকারদের বাগে আনা যাবে? প্রশ্ন রয়েছে পুলিসের অন্দরেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হচ্ছে একের পর এক ভ্লগ। পুলিসের নিষেধাজ্ঞাকে থোড়াই কেয়ার করে কেউ বাইক ছোটাচ্ছেন ঘণ্টায় ১৬৪ কিলোমিটার বেগে, কেউ আরও বেশি গতিতে ছোটাচ্ছেন স্পোর্টস কার। 


    যেমন, একটি ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলের নাম ‘অফিসিয়াল_ম্যাডপাইলট’। সবুজ রঙের ঝাঁ চকচকে সুপার বাইক, যার সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় প্রায় ৩০০ কিলোমিটার। সেই বাইক ছুটে চলেছে ঝড়ের গতিতে। তার পাশে সমানে সমানে পাল্লা দিচ্ছে ‘পোরসে ৯১১’। এই গাড়ির সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় প্রায় ২৬০ কিলোমিটার। উইকএন্ডে ফ্লাইওভারে উঠছে এই দু’টি গাড়ি ও বাইক। চলছে রেসিং। সকালের ফাঁকা ফ্লাইওভারে এই রেসিং-কালচার কতদিন চলবে? প্রশ্ন তুলছে আম জনতা। সৌভিক হালদার নামে যুবক বলেন, ‘পুলিসের কিয়স্ক থাকলেও সকালে কোনও অফিসার থাকেন না। বেপরোয়া গতি অন্যান্য যাত্রীদের জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে।’ সিপি মনোজ ভার্মা সমস্ত ফ্লাইওভারে বাইকের বেপরোয়া গতি রুখতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাফিক বিভাগকে।
  • Link to this news (বর্তমান)