রায়গঞ্জের বাসিন্দা সোহিনী দেবী সিংহী, সম্প্রতি পার করেছিলেন ১০০ বছর। তার মধ্যেই মঙ্গলবার পরিপূর্ণ পরিবার রেখে দেহত্যাগ করেন শতায়ু এই বৃদ্ধা। তাঁর শোভাযাত্রায় এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল পরিবারের তরফে। এক কথায়, এক রাজকীয় শোভাযাত্রার সাক্ষী থাকল রায়গঞ্জবাসী।
পরিবার সূত্রে খবর, সোহিনী দেবীর শেষ ইচ্ছে ছিল, তাঁর মৃত্যুর পর দেহ যেন পরিবারের লোকেরা কাঁধে বসিয়ে শোভাযাত্রা করে শ্মশানে নিয়ে যান। সেই মতোই হলো সব কিছু। এ দিন সকালে বৃদ্ধার দেহ সিংহাসনে বসিয়ে কাঁধে করে, ব্যান্ড-পার্টি বাজিয়ে শহর পরিক্রমায় বের হন তাঁরা। খরমুজাঘাট শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় সোহিনী দেবী সিংহীর।
পরিবারের তরফে আরও জানানো হয়েছে, তাঁদের সম্প্রদায়ের মানুষরা যাঁরা ১০০ বছর পূর্ণ করে প্রয়াত হন তাঁদের ‘বৈকুণ্ঠী’ বলা হয়। জানা গিয়েছে, তাঁরা শতবর্ষ পূর্ণ করলে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেন। সোহিনী দেবীও প্রায় ৯-১০ দিন ধরে খাওয়া-দাওয়া এমনকী জল পানও বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এর পর মঙ্গলবার তিনি দেহত্যাগ করেন।
প্রয়াত সোহিনী দেবীর ছেলে পোখরাজ সিংহী বলেন, ‘মায়ের শেষ ইচ্ছে ছিল এ ভাবেই শ্মশান যাত্রা করার। তাই ব্যান্ড বাজিয়ে উৎসবের সঙ্গে ‘বৈকুণ্ঠী’ নিয়ে বের হন তাঁরা।’
এ দিনের শোভাযাত্রায় সামিল হয়েছিলেন, রায়গঞ্জ মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অতনু বন্ধু লাহিড়ী। তিনিও এমন শোভাযাত্রা দেখে আপ্লুত। জানিয়েছেন, ‘আমাদের সংগঠনেরই সদস্যের মা শতবর্ষের পদার্পণ করে প্রয়াত হয়েছেন। সেই খবর পেয়েই এখানে আসি। এসে জানতে পারলাম যে তাঁর মায়ের শেষ ইচ্ছে ছিল যে তাঁর শেষযাত্রায় যেন বৈকুণ্ঠী বের করে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই কথা মতো তাঁর ছেলে ও নাতিরা ব্যান্ড বাজিয়ে হাসি মুখে শোভাযাত্রা করেন। এমন ঘটনা সাধারণত দেখা যায় না।’