ডিসেম্বরে মুর্শিদাবাদে আসত জঙ্গি নেতা জসিমউদ্দিন, জেনেছে অসম এসটিএফ
বর্তমান | ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: লালগোলা সীমান্তবর্তী এক এলাকার ‘জলসা’য় যোগ দিতে আনসারুল্লা বাংলা টিমের (এবিটি) প্রধান জসিমউদ্দিন রহমানির শীঘ্রই মুর্শিদাবাদ আসার কথা ছিল। জলসার নেপথ্যে সংগঠনে আসা নতুন ছেলেদের মগজ ধোলাই ছিল তার মূল উদ্দেশ্য। এই নিয়ে সংগঠনের ক্যাডার মোহাম্মদ শাদ রবি ওরফে সাহেবের সঙ্গে কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। জসিমউদ্দিনের সঙ্গে আরও কয়েকজন এপারে আসত বলে খবর। হরিহরপাড়ায় মিনারুল শেখের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার কথা ছিল রহমানির। কেরল থেকে ধৃত শাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই তথ্য পেয়েছেন অসম পুলিসের এসটিএফ। একইসঙ্গে মুর্শিদাবাদ থেকে দুবাই ও মালয়েশিয়াতে জীবিকার সন্ধানে যাওয়া লোকজনকে কীভাবে এবিটি’র সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে, তার তথ্য শাদের কাছে মিলেছে বলে খবর।
শাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অসম পুলিসের এসটিএফ’এর অফিসাররা জানতে পারছেন, তাদের মূল লক্ষ্য ছিল বিভিন্ন এজেন্সির হাত থেকে বাঁচা। পুলিসের ‘চোখে ধূলো’ দিয়ে এই রাজ্য সহ অসমে সংগঠন বিস্তার। কীভাবে এনআইএ এবং বিভিন্ন রাজ্যের পুলিস তাদের মোবাইল ট্র্যাক করেজেএমবি-এবিটি সদস্যদের গ্রেপ্তার করছে, সেই পদ্ধতি তারা জেনে গিয়েছিল। সেই কারণে হরিহরপাড়াতে একটি খারিজি মাদ্রাসায় বৈঠক করে শাদ জানিয়ে দেয় কোনওভাবে নিজেদের মধ্যে মোবাইল ব্যবহার করা যাবে না। এমনকী মেসেঞ্জার গ্রুপে চ্যাট পর্যন্ত করা যাবে না। সকলকে ভিপিএন (ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক) পদ্ধতিতে কল বাউন্স করে কথা বলতে নির্দেশ দেয় শাদ। ভিপিএন পদ্ধতিতে সকলের মোবাইল দুবাইয়ের লোকেশন করে রাখতে বলা হয়। যাতে কল এলে দেখায়, সেটি দুবাই থেকে এসেছে, পুলিস বিভ্রান্ত হয়। একইসঙ্গে স্ত্রী বা পরিবারের অন্যদের মোবাইল ব্যবহার করতে বলে শাদ। জেরায় সে জানিয়েছে, তার নির্দেশমতো আব্বাস আলি খোঁজ নিচ্ছিল, মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন গ্রামের কারা কারা রাজমিস্ত্রি বা অন্য কাজে মালেশিয়া বা দুবাই গিয়েছে। গ্রামে গ্রামে ঘুরে মুর্শিদাবাদের সেসব বাসিন্দাদের নাম ও ফোন নম্বর জোগাড় করা হয়। তদন্তকারীরা বলছেন, এরপর শাদ তালিকা ধরে সেসব প্রবাসীর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। মগজ ধোলাইয়ের পর ওই ব্যক্তিদের জানানো হয়, তাদের অ্যাকাউন্টে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে টাকা আসবে। এই টাকা সংগঠনের কাজে ব্যবহার করা হবে। একইসঙ্গে সংগঠন বাড়লে তাদের ভালো টাকা কমিশন দেওয়া হবে। সেই মতো কাজ শুরু হয়। দুবাই বা মালেশিয়া থেকে এ রাজ্য ও অসমের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে, সেগুলি চিহ্নিত করেছেন আসাম পুলিশের এসটিএফ আধিকারিকরা। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে তদন্তকারীরা জেনেছেন সকলেই কার্যত বেপাত্তা! তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ। সোর্স কাজে লাগিয়ে তাদের হদিশ জানার চেষ্টা চলছে।।