সংবাদদাতা, রামপুরহাট: আজ, বুধবার বড়দিন। তার আগে মঙ্গলবার সকাল থেকেই তারাপীঠ মন্দিরে ভিড় উপচে পড়ে। মন্দিরে ব্যাপক ভক্ত সমাগম হলেও হোটেলগুলিতে সেভাবে ভিড় নেই। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, শান্তিনিকেতনে পৌষমেলাতে হোটেলে থাকা পর্যটকদের আনাগোনা থাকায় মন্দিরে ভিড় বেশি হয়েছে। তাঁরা পুজো দিয়েই বোলপুর ফিরে যাচ্ছেন। তবে হোটেল বুকিংয়ের তথ্য অনুযায়ী আগামী শুক্রবার রাত থেকেই রাজ্য ছাড়িয়ে ভিন রাজ্যের হাজার হাজার পুণ্যার্থীর ঢল নামবে এই তীর্থভূমিতে।
বুধবার বড়দিনের ছুটি। মাঝে দু’দিন ‘ম্যানেজ’ করতে পারলেই শনি ও রবির ছুটি। আর টানা ছুটি মানেই ভ্রমণ পিপাসু বাঙালির কোথাও বেড়াতে যাওয়া। কেউ সমুদ্র ও পাহাড়ের টানে পচ্ছন্দের জায়গায়, কেউ বা মন্দিরে পুজো দিয়ে পুণ্যলাভের আশায় বেরিয়ে পড়েন। তাতেই মঙ্গলবার সকাল থেকে তারাপীঠ মন্দিরে ভিড় উপচে পড়ল। মন্দির কমিটির সম্পাদক ধ্রুব চট্টোপাধ্যায় বলেন, প্রতিবছর এই সময়ে ভিড়ে ঠাসা থাকে মন্দির চত্বর। এবছর বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে শান্তিনিকেতন পৌষমেলার আয়োজন করায় ভিড় অনেকে বেড়েছে। এদিন ভোর সাড়ে ৫টায় মন্দির খোলার অনেক আগে থেকেই ঠান্ডা উপেক্ষা করে দেবী দর্শনে ভক্তদের লম্বা লাইন পড়ে যায়।
সম্প্রতি মন্দিরের বেশকিছু নিয়মের বদল ঘটেছে। আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা সাধারণ লাইনে পুণ্যার্থীদের দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে না। বিহার থেকে পরিবার নিয়ে আগত প্রকাশ যাদব বলেন, এই সময় বাচ্চার স্কুলে ছুটি থাকায় শান্তিনিকেতন মেলায় এসেছি। সেখানে তিনদিনের জন্য হোটেল বুক রয়েছে। সোমবার রাতে মেলা ঘুরেছি। এদিন সকাল হতেই তারাপীঠে চলে এসেছি। তবে এর আগে পুজো দিতে এসে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছিল। এবার তার থেকে অনেকটা কম সময়ের মধ্যে দেবী দর্শন করে পুজো দিয়েছি। লজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুনীল গিরি বলেন, আগামী শুক্রবার রাত থেকে এখানে পর্যটকদের ভিড় বাড়বে।
লজ ব্যবসায়ী নিতাই মাল বলেন, অন্যান্য বছর ১ জানুয়ারিতে পৌষমেলা থাকে। এবার মেলা ২৮ ডিসেম্বর শেষ হবে। ফলে অনেকে মেলার পর তারাপীঠকে বেছে নিয়েছেন। অগ্রিম বুকিংই তা জানান দিচ্ছে। অনেকে এই সময় তারাপীঠে পুজো দেওয়ার পর বীরচন্দ্রপুরের একচক্রাধাম, নলাটেশ্বরী ও মুলুটি মায়ের দর্শন যান। ওই সমস্ত জায়গায় তেমন হোটেল না থাকায় অনেকেই তারাপীঠে ফিরে আসেন। ফলে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত অধিকাংশ হোটেল বুক।
কলকাতার বাগুইআটি থেকে পরিবার নিয়ে এসেছেন শতদল বন্দ্যোপাধ্যায়, মিহির পাল। তাঁরা বলেন, তারাপীঠের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। সকল পুণ্যার্থী যাতে একটা সিস্টেমের মধ্য দিয়ে পুজো দিতে পারে সেই ব্যবস্থাও করা হয়েছে। তবে মন্দিরে পুজো দেওয়ার একটা লাইন হলেই আরও ভালো হবে। কারণ, ভগবানের কাছে সবাই সমান।
মন্দির কমিটির সম্পাদক বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় মন্দিরের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মী ছাড়াও পুলিসের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমেও নজরদারি চালানো হচ্ছে।