• মানসের বিরুদ্ধে নালিশ ঠুকে চিঠি তৃণমূলনেত্রীকে!
    এই সময় | ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  • এই সময়, মেদিনীপুর ও কলকাতা: কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রের পর এ বার রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে জোড়াফুলের একদল বিধায়ক অভিযোগ জানালেন তৃণমূল‍নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের দাবি, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার আটজন বিধায়ক মানসের বিরুদ্ধে ‘উপদলীয়’ কাজকর্মের অভিযোগ তুলে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

    তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকেও চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে বলে এই নেতাদের বক্তব্য। কিছু দিন আগে এই চিঠি পাঠানো হলেও বিষয়টি মঙ্গলবার প্রকাশ্যে এসেছে।

    পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের একাংশের দাবি, এই চিঠিতে কেশপুরের বিধায়ক শিউলি সাহা, পিংলার বিধায়ক অজিত মাইতি, গড়বেতার বিধায়ক উত্তরা সিংহ হাজরা, ডেবরার বিধায়ক হুমায়ুন কবীর, দাঁতনের বিধায়ক বিক্রম প্রধান, নারায়ণগড়ের বিধায়ক সূর্য অট্ট, দাসপুরের বিধায়ক মমতা ভুঁইয়া ও চন্দ্রকোনার বিধায়ক অরূপ ধাড়ার নাম রয়েছে। এই চিঠিতে মানসের বিরুদ্ধে গোষ্ঠী রাজনীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে।

    পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূলের এক বিধায়কের বক্তব্য, ‘উনি দলের মধ্যে এমন গোষ্ঠী রাজনীতি করছেন যে কাজ করতে পারছি না। এই রাজনীতি আমাদের দলে ছিল না। মানস ভুঁইয়া কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসার পরে এমন রাজনীতি শুরু হয়েছে। কোথাও বিধায়কের বিরুদ্ধে দলের ব্লক সভাপতিকে লড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, কোথাও ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে বিধায়ককে লড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।’ এই জেলার আর এক বিধায়ক বলেন, ‘আমরা তৃণমূলের জন্ম লগ্ন থেকে রয়েছি, এমন রাজনীতির মধ্যে কখনও পড়তে হয়নি।’

    প্রকাশ্যে অবশ্য জোড়াফুলের কোনও বিধায়ক এ নিয়ে বিবৃতি দিতে চাননি। বরং এমন ঘটনার কথা জানা নেই বলে কয়েকজন দাবি করেছেন। দাঁতনের বিধায়ক বিক্রম প্রধান এ দিন বলেন, ‘কেউ অপপ্রচার করার জন্য এ সব করেছে। আমি কিছু জানি না।’ মমতা ভুঁইয়ার বক্তব্য, ‘আমি এ সবের কিছুই জানি না। আমি সাতে–পাঁচে থাকি না।’ এ নিয়ে একাধিক বার মানসকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

    যদিও তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ মঙ্গলবার বলেন, ‘এটা সাংগঠনিক বিষয়। এত বড় দল, এত বড় পরিবার, গণতান্ত্রিক দল, ফলে সংগঠনের মধ্যে আলোচনা হবে। সংগঠনের ভিতরের বিষয় এটা। দলের নেতা–নেত্রীরা দেখছেন। বাড়তি মাথা ঘামানোর কোনও প্রয়োজন নেই।’

    পার্থ ভৌমিক ব্যারাকপুরের সাংসদ হওয়ার পর রাজ্যের সেচ দপ্তরের দায়িত্ব পান মানস। কিছু দিন আগে তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্যও হয়েছেন বর্ষীয়ান এই নেতা। যদিও পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূলের একাংশের সঙ্গে মানসের সম্পর্ক মসৃণ নয় বলে দলের একাংশের বক্তব্য। কিছু দিন আগে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে আদি তৃণমূল নেতা তথা খড়্গপুর গ্রামীণের বিধায়ক দীনেন রায় তাঁর বিধানসভা এলাকায় নদী–বাঁধ মেরামতিতে অর্থ বরাদ্দ হচ্ছে না বলে সেচ দপ্তরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।

    তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজয় হাজরার বক্তব্য, ‘আমাকে দলনেত্রী অথবা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কিছু জিজ্ঞাসা করেননি। জেলায় মানস ভুঁইয়া কোনও সাংগঠনিক দায়িত্বে নেই, উনি সংগঠনে আগ বাড়িয়ে কিছু বলতে গিয়েছেন, এমন আমি দেখিনি।’

  • Link to this news (এই সময়)