এই সময়, কালনা: কাস্টমারের টাকা ও সোনা–রুপোর গয়না হাতাতে অভিনব ছক কষলেন খোদ সোনার দোকানের মালিক। ভাড়া করা দুষ্কৃতীদের দিয়ে মার খেলেন। টাকা–গয়না ছিনতাইয়ের ঘটনাও সাজালেন মাথা খাটিয়ে। তবুও শেষরক্ষা হলো না।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ভেঙে পড়ে সবটা স্বীকার করে নিয়েছেন মন্তেশ্বরের কুলে দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা সোনার ব্যবসায়ী বছর ২৩–এর আলমগির শেখ ওরফে আলো। তাঁকে গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার কালনা মহকুমা আদালতে পেশ করে মন্তেশ্বর থানার পুলিশ।
এ দিন আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে আলমগির বলেন, ‘একটু চাপে পড়ে গিয়েছিলাম। তাই এই প্ল্যান করেছিলাম।’ কালনার এসডিপিও রাকেশ চৌধুরী বলেন, ‘কিছুটা সোনা ও রুপোর গয়না উদ্ধার হয়েছে। বাকিটা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’
নাদনঘাট বাজার এলাকায় একটি সোনার দোকান রয়েছে আলমগিরের। ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় কর্মচারী মুন্সি হাইবুল শেখকে নিয়ে মোটরবাইকে বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিল সোনা–রুপোর গয়না ভর্তি একটি ব্যাগ। মন্তেশ্বর থানা এলাকায় তিন দুষ্কৃতী তাঁদের পথ আটকায়।
তারা প্রথমে হাইবুলকে মারতে মারতে একটি মাঠের দিকে নিয়ে যায়। দুষ্কৃতীরা চলে গেলে হাইবুল ঘটনাস্থলে এসে দেখেন, রাস্তার উপর পড়ে রয়েছেন আলমগির। গয়না ভর্তি ব্যাগ সেখানে নেই। আলমগির হাইবুলকে জানান, ওই ব্যাগ নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। ২২ ডিসেম্বর মন্তেশ্বর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন হাইবুল। অভিযোগে জানানো হয়, ৫০০ গ্রাম সোনা ও কিছু রুপোর গয়না ছিনতাই হয়েছে। তদন্ত শুরু করে মন্তেশ্বর থানার পুলিশ।
আলমগির পুলিশকে জানিয়েছিলেন, তাঁকে দুষ্কৃতীরা মারধর করেছে। কিন্তু তাঁর শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন না থাকায় পুলিশের সন্দেহ হয়। তদন্তে নেমে নাদনঘাটের কুশোগড়িয়ার বাসিন্দা শাহজামাল শেখ ও বাগবুল মল্লিক নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সোমবার এই দু’জনকে কালনা মহকুমা আদালতে পেশ করলে বিচারক চার দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
শাহজামাল ও বাগবুলকে দুষ্কৃতী হিসেবে ভাড়া করেছিলেন আলমগির। এ ঘটনার সঙ্গে তাঁর জড়িত থাকার কথা পুলিশকে জানিয়ে দেয় ধৃত দু’জন। এর পর আলমগিরকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। তাঁর থেকে পুরো ঘটনা জানতে পারার পরেই তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এই ঘটনার সঙ্গে আলমগিরের কর্মচারী হাইবুলের কোনও যোগ নেই বলেই বলে মনে করছে পুলিশ।