• আলোয় সজ্জিত চার্চ, পর্যটকদের ভিড়ে উৎসবের আনন্দে জমজমাট মুর্শিদাবাদ
    বর্তমান | ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, লালবাগ: বুধবার প্রবল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলাজুড়ে বড়দিন পালিত হল। সদর শহর বহরমপুরের আর্মেনিয়ান চার্চ, সেন্ট জনস চার্চ, রোমান ক্যাথলিক চার্চের পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন প্রান্তের চার্চে এদিন সকালে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষ প্রার্থনা করেন। দিনভর বিভিন্ন কর্মসূচি চলে। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতেই চার্চগুলি আলোক মালায় সেজে ওঠে। ঠান্ডা উপেক্ষা করেই অনেক রাত পর্যন্ত হাজার হাজার সাধারণ মানুষ চার্চে ভিড় জমান। বড়দিনের কেক কিনতে এদিন সকাল থেকে দোকানে দোকানে ভিড় লক্ষ্য করা যায়। বড়দিন উপলক্ষ্যে অনেককেই রেস্তরাঁ, হোটেলে রাতের খাওয়াদাওয়া করতে দেখা যায়। অনেকে আবার শপিং মলে কেনাকাটা ও সিনেমা দেখে বড়দিন সেলিব্রেশন করেন। বহরমপুরের এক রেস্তরাঁর ম্যানেজার বলেন, এদিন বিকেল থেকেই খদ্দেরদের ঢল নামে। ভিড় সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়। ইচ্ছা না থাকলেও অনেককে ঘুরিয়ে দিতে হয়েছে। লালবাগের এক বিক্রেতা বলেন, অন্যবারের তুলনায় এবার অনেক বেশি কেক তুলেছিলাম। বুধবার দুপুরের আগেই সমস্ত বিক্রি হয়ে যায়। জিয়াগঞ্জ শহরের এক শপিং মলের ম্যানেজার বলেন, বিভিন্ন উৎসবে প্রিয়জনকে উপহার দেওয়া এখন একটা ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিনও অনেকেই এসেছিলেন, তাঁদের প্রিয়জনদের জন্য উপহার কিনতে। 

    এদিকে বড়দিন উপলক্ষ্যে প্রত্যাশামতো নবাবের শহরের দর্শনীয় স্থানগুলিতে পর্যটকদের ঢল নামে। দিনের আলো ফুটতেই জেলা ও জেলার বাইরের বিভিন্ন প্রান্ত পর্যটকরা বাস, ছোট গাড়ি ও ট্রেনে চেপে আসতে শুরু করেন। বেলা গড়াতেই পর্যটকদের ভিড়ে ইতিহাসের শহর মুর্শিদাবাদ সরগরম হয়ে ওঠে। হাজারদুয়ারি, মোতিঝিল, কাঠগোলাপ বাগান, কাটরা মসজিদ সহ দর্শনীয় স্থানগুলিতে পর্যটকদের ঠাসা ভিড় লক্ষ্য করা যায়। তবে অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলির তুলনায় হাজারদুয়ারি ও মোতিঝিলে পর্যটকদের ভিড় অনেকটাই বেশি ছিল। এক ট্যুরিস্ট গাইড বলেন, বড়দিন থেকেই শীতের ভরা মরশুম শুরু। তবে এদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত পর্যটকদের উপস্থিতি দেখে মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু যত বেলা গড়িয়েছে পর্যটকের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। নিজামত কিল্লার এক খাবার হোটেলের কর্মী বলেন, রেকর্ড সংখ্যক ভিড় না হলেও পর্যটকদের ভিড় ছিল। মুর্শিদাবাদ জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজ'এর সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ভিড় হয়েছে। তবে আরও প্রত্যাশা ছিল। লালবাগ মহকুমা পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, বড়দিন উপলক্ষ্যে দর্শনীয় স্থানগুলিতে পুলিস মোতায়েন করা হয়েছে। শহরে যানজট এড়াতে বেশ কিছু পয়েন্টে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয়। মহিলারা কোনওপ্রকার অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার না হন, তার জন্য মহিলা উইনার্স টিম শহরজুড়ে টহলদারি চালাচ্ছে। 

    মুর্শিদাবাদ পুরসভার পক্ষ থেকে সহায়তা কেন্দ্র এবং টয়লেট ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এইদিন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে পার্কে, মাঠে নদীর ধারে পিকনিক করতে দেখা যায়।  
  • Link to this news (বর্তমান)